প্রবাসী আয় ও রপ্তানি আয়ের উর্ধ্বগতির ফলে ডলারের বিপরীতে শক্তিশালী হচ্ছে বাংলাদেশি মুদ্রা। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, গত ১০ দিনে মার্কিন ডলারের বিপরীতে টাকার মান উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। রোববার (১৩ জুলাই) বেশিরভাগ ব্যাংকে প্রতি ডলার লেনদেন হয়েছে ১২০.৩০ থেকে ১২১.২০ টাকায়, যা আগের সপ্তাহে ছিল ১২২.৮০ থেকে ১২২.৯০ টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান বলছে, সদ্যসমাপ্ত ২০২৪-২৫ অর্থবছরে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স দাঁড়িয়েছে ৩০.৩৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে, যা দেশের ইতিহাসে এক অর্থবছরে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স প্রবাহ। গত অর্থবছরের (২০২৩-২৪) তুলনায় এটি প্রায় ২৬.৮০ শতাংশ বেশি।
এই ধারাবাহিকতায় চলতি অর্থবছরের জুলাই মাসের প্রথম ১২ দিনেই প্রবাসীরা দেশে পাঠিয়েছেন প্রায় ১.০৭ বিলিয়ন ডলার, অর্থাৎ দৈনিক গড় রেমিট্যান্স এসেছে প্রায় ৮৯.২৫ মিলিয়ন ডলার, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি।
আরও পড়ুন
এছাড়া রপ্তানি খাতেও এসেছে ইতিবাচক প্রবৃদ্ধির বার্তা। বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে দেশের রপ্তানি আয় ৮.৫৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ৪৮.২৮ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে, যা টাকার মান বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা রেখেছে। বাজারভিত্তিক বিনিময় হার কার্যকর থাকা সত্ত্বেও টাকার মান বৃদ্ধির এ ধারা এখনো অব্যাহত রয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, অন্তর্বর্তী সরকারের নানা সংস্কারমূলক পদক্ষেপের কারণে অর্থনীতিতে মানুষের আস্থা ফিরছে, যার ফলস্বরূপ ডলারের সরবরাহ বেড়েছে এবং বাজার স্থিতিশীল হয়েছে। তিনি বলেন, “সরকার প্রশাসন ও আর্থিক খাতে সংস্কারের মাধ্যমে পরিস্থিতি উন্নয়নে কাজ করছে, যা ইতিবাচক ফল দিচ্ছে।”
প্রিমিয়ার ব্যাংক পিএলসি’র ডিএমডি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, গত আগস্ট থেকে ধারাবাহিকভাবে রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়ে চলেছে। এ প্রবৃদ্ধি সরকারের জন্য অর্থনৈতিক চাপ মোকাবিলায় একটি স্বস্তির বার্তা হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে বর্তমান বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার প্রেক্ষাপটে এটি দেশের জন্য ইতিবাচক একটি দিক।