বিদ্যুৎবিভাগে দুনীতিতে লক্ষ কোটি টাকা লুটপাটকারী খলনায়কদের একজন শেখ হাসিনার সাবেক মূখ্য সচিব আহমদ কায়কাউস। তার বংলাদেশি পাসপোর্ট ছাড়াও জাতিসংঘ ও যুক্তরাষ্টের পাসপোর্ট আছে। আর এসব পাসপোর্ট ব্যাবহার করেই যেকোনো সময় এমিরেটস বিমানের একটি ফ্লাইটে বিদেশে পালিয়ে যেতে পারেন। এ খবর নিশ্চিত করেছে সংশ্লিষ্ট সূত্র।
হাসিনা সরকারের দুনীতিবাজ মাফিয়া ব্যাক্তিত্ব্ আহমদ কায়কাউসের দুনীতির বড় উদাহরণ হচ্ছে এই পাসপোট। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের বিদ্যুৎ সচিব হয়ে আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে হয়েছেন আমেরিকার নাগরিক। বিশ্বজুড়ে ঘোরেন দুই দেশের পাসপোট ব্যবহার করেই। একইসঙ্গে যুক্তরাষ্টের নাগরিক আবার সেসময়ের প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব। এতবড় প্রতারণা জালিয়াতি কিভাবে করলেন এই কায়কাউস? তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের দুনীতির মহোৎসবের সময়টায় যেনো সব অনিয়ম দুনীতিই জায়েজ ছিলো মাফিয়াতন্ত্র কায়েমকারী সবার।
দেশের সার্বভৌমত্বের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতাকারী আহমদ কায়কাউসের কয়টি বাড়ী আছে আমেরিকায় ধারণা করতে পারেন? যিনি সেময়ে খোদ প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব হিসেবে এতসব অপকম করে যাচ্ছেন। সূদুর আমিরিকায় কয়েক হাজার কোটি টাকা পাচার করেছেন বলে অভিযোগ আছে আহমদ কায়কাউসের বিরুদ্ধে। মার্কিন নাগরিক কায়কাউস প্রায় ডজন খানেক বাড়ি কেনেন দেশটিতে। এছাড়া বেনামে গড়েন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।
আরও পড়ুন
দুনীতিবাজ আহমদ কায়কাউস বিদ্যুৎ বিভাগকে লাটপুটে খেয়েছেন। তার সময়ে বিদ্যুৎ বিভাগে কোনো টেন্ডার ছাড়াই ১০০টি বিদ্যুৎকেন্দ্রের লাইসেন্স দিয়েছেন। রেন্টাল কুইক রেন্টাল ও ইন্ডিপেন্ডেন্ট পাওয়ার প্রডিউসার কেন্দ্রগুলোকে ক্যাপাসিটি চাজ হিসেবে ১ লক্ষ কোটি টাকা গচ্চা হিসেবে দেয়া হয়েছে। যার বেশিরভাগ টাকা কায়কাউস-নসরুল হামিদ বিপু ও তৌফিক ই এলাহি সিন্ডিকেট লুটেপুটে নিয়েছেন।
২০১৯ সালে বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব থেকে সেসময়কার প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব হন দুনীতিবাজ আহমদ কায়কাউস। মুখ্য সচিব পদে বসেও বিদ্যুৎবিভাগ নিয়ন্ত্রণ করতেন কায়কাউস বিপু আর তৌফিক-ই- এলাহী সিন্ডিকেট। ১৫ বছরে বিদ্যুৎ বিভাগ থেকে লুটেপুটে প্রায় ২ লাখ কোটি টাকা হাতিয়ে নেন। দুনীতির মাফিয়া আহমদ কায়কাউস প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব হয়ে এখানেও আইন ভেঙ্গে জ্বালানী ও বিদ্যুৎ গবেষণা পরিষদ ইপিআরসির চেয়ারম্যান হন। একই সময়ে আইনের তোয়াক্কা না করে কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানী, বাংলাদেশ সিপিজিসিবিএল এর চেয়ারম্যান হন।
আহমদ কায়কাউস মূখ্য সচিব থাকাকালে চট্টগ্রামে নিজ এলাকা পটিয়া পৌরসভার ২ নম্বর সুসক্রদন্ডী ওয়াডের জন্য এক হাজার কোটি টাকার বেশি বরাদ্দ দেন। যা কোনো সংসদীয় আসনের নামেও এমন বরাদ্দ হয়না। দেশের ইতিহাসে ক্ষমতার ভয়াবহ অপব্যবহার করে নিজের ছোট্ট ওয়াডের নামে বরাদ্দ নিয়ে তার পুরোটাই লুটে নেন কায়কাউস। এতে সহায়তা করে নিজেও হাজার কোটি টাকার মালিক বনে যান ওই ওয়াডের কাউন্সিলর রুপক সেন।
তৎকালীন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগকে বিদুৎবিভাগ থেকে লাখ কোটি টাকা লুটপাটে সাহায্য করার পুরস্কার হিসেবে আহমদ কায়কাউসকে বিশ্বব্যাংকের বিকল্প নিবাহী প্রধান করেন শেখ হাসিনা। ২০২৪ সালে নিবাচনের পর আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করলে গুঞ্জণ ওঠে দ্বিতীয় দফায় মন্ত্রী হচ্ছেন দেশের দুনীতির মাষ্টারমাইন্ড আহমদ কায়কাউস। কিন্তু বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পালিয়ে গেলে আর মন্ত্রী হওয়া হলোনা আহমদ কায়কাউসের।