রাজধানী ঢাকার আদালতের এজলাস কক্ষ থেকে ‘উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে’ একে একে সরিয়ে ফেলা হচ্ছে লোহার খাঁচা।
এর আগে, এজলাস কক্ষ থেকে লোহার খাঁচা সরিয়ে ফেলাকে ‘নির্যাতন ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ’ বলে উল্লেখ করে লোহার খাঁচা সরাতে হাইকোর্টে হওয়া রিটের পক্ষের আইনজীবী শিশির মনির।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে আজ শনিবার ঢাকার আদালতের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে গতকাল শুক্রবার ঢাকার আদালতের কয়েকটি এজলাস কক্ষ থেকে লোহার খাঁচা সরিয়ে ফেলা হয়। গণপূর্ত বিভাগের লোকজন লোহার খাঁচা সরানোর কাজটি করেন। পর্যায়ক্রমে আদালতের সব লোহার খাঁচা সরিয়ে ফেলা হবে।’
এর আগে, দেশের অধ্বঃস্তন আদালত কক্ষে থাকা লোহার খাঁচা অপসারণের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের ১০ আইনজীবী। সে রিটের শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট গত ৪ ফেব্রুয়ারী রুলসহ আদেশ দিয়েছিলেন।
আরও পড়ুন
আজ শনিবার রিটের পক্ষের আইনজীবী শিশির মনির বলেন, সারাদেশে অধ্বঃস্তন আদালত কক্ষে কতগুলো লোহার খাঁচা রয়েছে সে বিষয়ে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। সেই সাথে হাইকোর্ট তার রুলে আদালত কক্ষে লোহার খাঁচার পরিবর্তে কাঠগড়া পুনঃস্থাপনের নির্দেশ কেন দেয়া হবে না, তা জানতে চেয়েছিলেন।
এছাড়া আদালত কক্ষে লোহার খাঁচা বসানো কেন সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৩১, ৩২ ও ৩৫ এর সাথে সাংঘর্ষিক হবে না, রুলে তাও জানতে চাওয়া হয়েছিল।’
ঢাকার আদালতের লোহার খাঁচা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস গত ১২ জুন সাংবাদিকদের বলেন, ‘আজকে আমরা অনেকক্ষণ খাঁচার (আসামির কাঠগড়া) মধ্যে ছিলাম।
আমি যত দূর জানি, যত দিন আসামি অপরাধী হিসেবে দোষী সাব্যস্ত না হচ্ছে, তত দিন তিনি নিরপরাধ হিসেবে বিবেচিত হবেন। একজন নিরপরাধ নাগরিককে শুনানির সময় লোহার খাঁচায় (আসামির কাঠগড়া) দাঁড়িয়ে থাকতে হবে, এটা আমার কাছে অত্যন্ত অপমানজনক। এটা গর্হিত কাজ। এটা কারও ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য না হয়। একটা পর্যালোচনা হোক। একটা সভ্য দেশে কেন একজন নাগরিককে শুনানির সময় পশুর মতো দাঁড়িয়ে থাকতে হবে? যেখানে তিনি তখনো দোষী সাব্যস্ত হননি।’