“সাইকেল চাই না, বাবার লাশ চাই” শিরোনামে একটি সংবাদ বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রকাশিত হওয়ার পর সৌদি আরবে নিহত প্রবাসী মাদারীপুর সদর উপজেলার মস্তফাপুর ইউনিয়নের পশ্চিম খৈয়ারভাঙ্গা গ্রামের মিলন মাতুব্বরের মাদ্রাসা পড়ুয়া ছেলে আবিরকে সাইকেল উপহার দিয়েছেন মাদারীপুর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মারুফুর রশিদ খান।
মঙ্গলবার বিকালে জেলা প্রসাশকের সম্মেলন কক্ষে আবিরকে সাইকেলটি দেওয়া হয়। এ সময় আবিরের মা, চাচা, ছোট দুই ভাই উপস্থিত ছিলেন।
মাদারীপুর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মারুফুর রশিদ খান বলেন, সাংবাদিকদের কাছ থেকে জানতে পারি মস্তফাপুর ইউনিয়নের খৈয়ারভাঙ্গা গ্রামের মিলন সৌদি আরবে মৃত্যু বরণ করেছেন।
তার ৩ জন শিশু ছেলে ও স্ত্রী অসহায় অবস্থায় রয়েছে। বড় ছেলে ৯ বছর বয়সী আবির মাতুব্বর মাদ্রাসায় যাতায়াতের জন্য তার বাবার কাছে সাইকেল চেয়েছিল, কিন্তু কিনে দেওয়ার আগেই শিশুটির বাবা মারা গেছেন। তাই তার বাবার মৃত্যুর কষ্ট কিছুটা লাঘব করতে আমাদের পক্ষ থেকে তাকে একটি সাইকেল দেওয়া হলো।
আরও পড়ুন
পরবর্তীতে এই পরিবারকে স্বাবলম্বী করার জন্য আরও সহয়তা প্রদান করা হবে। এছাড়া নিহত মিলনের লাশটি সৌদি থেকে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলেছি।
উল্লেখ্য, পরিবারের আর্থিক সচ্ছলতা ফেরানোর জন্য ৫ বছর আগে সৌদি আরবে যায় মাদারীপুরের খৈয়ারভাঙ্গা গ্রামের সিরাজুল হক মাতুব্বরের ছেলে মিলন মাতুব্বর। ৪ ভাই ও ৩ বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন মেঝ।
সৌদি আরবের রিয়াদ শহরের হালুজারায় থেকে কাজ করে আসছিলেন তিনি। সৌদির আকামাসহ নিজ খরচ শেষে কোন রকম টেনেটুনে সংসারের খরচ চালাতেন তিনি।
কিন্তু আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হতে পারেননি মিলন। প্রায় ২০ লাখ টাকার দেনা রয়েছে বাংলাদেশের নিজ এলাকায়। গত ১৮ জুন রাতে সৌদি আরবে বসবাসরত বাসায় ব্রেইন স্ট্রোক করে অসুস্থ হয়ে পড়েন মিলন।
পরে একই সঙ্গে থাকা বাংলাদেশী প্রবাসীরা সৌদি আরবের রিয়াদ শহরের একটি হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করে। সেখানেই ৬ দিন পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।
রোববার (২৩ জুন) দুপুরে সৌদি থেকে তার পরিবারের কাছে মৃত্যুর খবর জানালে স্বজনদের মাঝে আহাজারি শুরু হয়।