মালয়েশিয়ায় কাজের প্রলোভনে বাংলাদেশি কর্মীদের ভ্রমণ ভিসায় পাঠিয়ে মানবপাচারের অভিযোগ উঠেছে। দীর্ঘদিন ধরে শ্রমবাজার বন্ধ থাকায় প্রতারণার ফাঁদে পড়ছেন হাজারো বাংলাদেশি। লাখ লাখ টাকা খরচ করে দেশটিতে গেলেও কাজ না পেয়ে ফিরে আসতে বাধ্য হচ্ছেন অনেকে, কেউ কেউ আবার নির্যাতনের শিকার হয়ে ফেরত এসেছেন।
জানা যায়, ২০২৩ সালের ৩১ মে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগে মালয়েশিয়া সরকার বাংলাদেশের শ্রমবাজার বন্ধ করে দেয়। এক বছরের বেশি সময় পার হলেও এখনও বাজারটি পুনরায় চালু হয়নি। এ সুযোগে কিছু চক্র ভ্রমণ ভিসার আড়ালে অবৈধভাবে কর্মী পাঠানোর চেষ্টা করছে। গত সাত মাসে অন্তত ৪০০ বাংলাদেশি এই পন্থায় মালয়েশিয়ায় প্রবেশের চেষ্টা করেছেন। কারও ফেরা হয়েছে বিমানবন্দর থেকেই, কেউ আবার গ্রেপ্তার হয়ে দেশে ফিরেছেন।
অভিবাসন বিশেষজ্ঞদের মতে, শ্রমবাজার বৈধভাবে চালু না হলে মানবপাচার ঠেকানো কঠিন। এ বিষয়ে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বাজার চালুর ক্ষেত্রে মালয়েশিয়ার পক্ষ থেকে নির্ধারিত রিক্রুটিং এজেন্সির তালিকা মানার শর্ত দেওয়া হয়েছে, যাকে ‘সিন্ডিকেট’ বলা হয়। তবে মানবপাচার রোধে সরকারের নানা পদক্ষেপ চলমান রয়েছে।
আরও পড়ুন
এ পরিস্থিতিতে আগামী ১১ আগস্ট মালয়েশিয়া সফরে যাচ্ছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। অভিবাসন সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন, এই সফরের মাধ্যমে শ্রমবাজার উন্মুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হবে। এর আগে প্রবাসী কল্যাণ উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল মালয়েশিয়া সফর করেন এবং ঢাকায় দ্বিপক্ষীয় বৈঠকেও অংশ নেন, যদিও সিন্ডিকেট সংক্রান্ত মতবিরোধের কারণে সমঝোতা হয়নি।
ড. আসিফ নজরুল বলেন, “মালয়েশিয়ার সরকার যদি চুক্তি পরিবর্তনে রাজি না হয়, তবে আমাদের সামনে দুটি পথ রয়েছে— এক, তাদের নির্ধারিত রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে কর্মী পাঠানো; দুই, জানিয়ে দেওয়া যে আমরা আর কর্মী পাঠাব না।”