‘আমি দেখেছি আম্মু আগুনে পুড়ছে’-মাইলস্টোন দুর্ঘটনায় শিশু জায়রার করুণ স্মৃতি

'i saw my mother burning in the fire' child zaira's tragic memory of the milestone accident

রাজধানীর দিয়াবাড়িতে মাইলস্টোন স্কুলে ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনার সময় অল্পের জন্য প্রাণে রক্ষা পায় তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী আসমাউল হোসনা জায়রা। কিন্তু তার চোখের সামনে আগুনে পুড়ে মর্মান্তিকভাবে প্রাণ হারান তার মা লামিয়া আক্তার সোনিয়া।

গত ২১ জুলাই মাইলস্টোন স্কুলের আঙ্গিনায় একটি প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হলে অন্তত ৩৪ জন নিহত হন, আহত হন অনেক শিক্ষার্থী ও অভিভাবক। দুর্ঘটনার পর থেকে নিখোঁজ ছিলেন সোনিয়া। পরে ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে তার মরদেহ শনাক্ত করে অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। ২৪ জুলাই মরদেহটি স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

ঘটনার সময় সোনিয়া মেয়েকে স্কুল থেকে আনতে গিয়েছিলেন বলে জানান জায়রার বাবা আমিরুল ইসলাম জনি। তিনি বলেন, দুর্ঘটনার ঠিক আগে সোনিয়া মেয়েকে ক্লাসশিট ঠিক করানোর জন্য একজন শিক্ষকের কাছে পাঠান। এর পরপরই বিমানটি বিধ্বস্ত হয়ে আগুন ধরে যায়, আর সেখানেই ঘটনাস্থলে সোনিয়ার মৃত্যু ঘটে।

মাত্র কয়েক বছর বয়সী জায়রার স্মৃতিতে সেই ভয়াবহ মুহূর্ত এখনও স্পষ্ট। বাবাকে সে বলে, “তোমরা আম্মুকে খুঁজে কষ্ট করছো, কিন্তু আমি জানি—আম্মু আর নেই। আমি নিজ চোখে দেখেছি, আগুনে পুড়ে গেছেন।” এমন বর্ণনা শুনে বাকরুদ্ধ হয়ে যান তার বাবা।

ডিএনএ পরীক্ষার ফলাফল নিশ্চিত হওয়ার পর গত ২৫ জুলাই ঢাকার সিএমএইচ থেকে সোনিয়ার মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। সোনিয়ার বাবা বাবুল হোসেন বলেন, “অনেক জায়গায় খোঁজার পর যখন মেয়ের সন্ধান পেলাম, তখন মরদেহের অবস্থা দেখে ভেঙে পড়ি। শরীর তিন-চার টুকরো হয়ে গেছে।”

পরে রাতেই ঢাকার সাভারের বিরুলিয়ার বাগনি বাড়ি এলাকার পারিবারিক কবরস্থানে সোনিয়াকে দাফন করা হয়। এ ঘটনায় পুরো এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া। মেয়ের চোখের সামনে মায়ের এমন মর্মান্তিক মৃত্যু যেন আরও হৃদয়বিদারক করে তুলেছে এই দুর্ঘটনাকে।

আরও দেখুন:

whatsappচ্যানেল ফলো করুন

প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন news@probashtime.com মেইলে।

Gif final ezgif.com optimize