সরকারি “মা ও শিশু সহায়তা কর্মসূচি”র আওতায় তিন বছর পর্যন্ত অন্তঃসত্ত্বা নারীদের জন্য মাতৃত্বকালীন ভাতা দেওয়ার নিয়ম থাকলেও, পঞ্চগড় জেলায় গত এক বছর ধরে বন্ধ রয়েছে এই সহায়তা। এতে জেলার ৬০২ জন নারী মারাত্মক ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন বলে জানা গেছে।
জেলার সদর উপজেলার ৫৭৭ জন, বোদা উপজেলার ২২ জন এবং দেবীগঞ্জ উপজেলার ৩ জন অন্তঃসত্ত্বা নারী ভাতা না পাওয়ার সমস্যায় রয়েছেন। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, শুরুতে কয়েক মাস সহায়তা পেলেও গত এক বছর ধরে তারা কোনো অর্থ পাচ্ছেন না। বিষয়টি একাধিকবার সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জানানো হলেও কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
স্থানীয়দের দাবি, একটি প্রতারক চক্র ভাতার টাকা আত্মসাৎ করছে। অভিযোগ উঠেছে, এই চক্রটি হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে ভাতাভোগী নারীদের মোবাইল নম্বর পরিবর্তন করে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ভাতার টাকা তুলে নিচ্ছে। ভুক্তভোগীদের আশঙ্কা, এ চক্রের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কিছু কর্মকর্তা জড়িত থাকতে পারে।
আরও পড়ুন
পঞ্চগড় সদর উপজেলার পূর্ব শিকারপুরের রিনা আক্তার বলেন, “প্রথমে কয়েকবার ভাতা পেয়েছিলাম। এরপর এক বছর ধরে কিছুই পাচ্ছি না। কর্তৃপক্ষকে জানিয়েও কোনো ফল হয়নি।” একই অভিযোগ চানপাড়ার মালেকা আক্তারের, যিনি বলেন, “সন্তানের খরচ চালাতে এই টাকার ওপর নির্ভর করতাম। এখন হতাশ হয়ে গেছি।”
জেলা মহিলা বিষয়ক অধিদফতরের উপ-পরিচালক একএম ওয়াহিদুজ্জামান জানান, বিষয়টি ঢাকা অফিস থেকে জানার পর সমাধানে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ভুক্তভোগীদের মোবাইল ও ব্যাংক অ্যাকাউন্ট সংশোধনের প্রক্রিয়া চলছে, এবং দ্রুত সমস্যার সমাধান হবে বলে তিনি আশ্বস্ত করেন।
উল্লেখ্য, পঞ্চগড় জেলার ৫টি উপজেলায় মোট ৪৩টি ইউনিয়ন রয়েছে। সদর উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়ন থেকে ৯ জন এবং অন্যান্য উপজেলাগুলোর প্রতিটি ইউনিয়ন থেকে ৫ জন করে অন্তঃসত্ত্বা নারী এই মাতৃত্বকালীন ভাতার আওতায় অন্তর্ভুক্ত হন।