রাজধানীর উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমানবাহিনীর একটি যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়ে প্রাণহানির মর্মান্তিক ঘটনায় সারা দেশে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। আহতদের উন্নত চিকিৎসা নিশ্চিত করতে সিঙ্গাপুর থেকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও নার্স আনা হচ্ছে। মঙ্গলবার রাতেই তারা ঢাকায় পৌঁছাবেন বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী সায়েদুর রহমান।
প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, বিদেশি চিকিৎসক দল আহতদের অবস্থা মূল্যায়ন করবেন এবং প্রয়োজনে তাদের বিদেশে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। দুর্ঘটনার পর সরকার দ্রুত ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছে, যাতে আহতরা সঠিক চিকিৎসা পেতে পারেন।
আইএসপিআরের তথ্য অনুযায়ী, দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৩১ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের মধ্যে অধিকাংশই মাইলস্টোন স্কুলের শিক্ষার্থী। বিভিন্ন হাসপাতালে এখনো চিকিৎসাধীন রয়েছেন ১৬৫ জন। নিহতদের মধ্যে একজন পাইলট ও একজন শিক্ষিকা থাকলেও, বাকিরা সবাই ছিলেন শিক্ষার্থী।
আরও পড়ুন
এদিকে দুর্ঘটনায় নিহতদের দাফনের জন্য উত্তরা ১২ নম্বর সেক্টরের সিটি করপোরেশন কবরস্থানে স্থান নির্ধারণ করে দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে জানানো হয়, এ কবরস্থান ভবিষ্যতে নিহতদের স্মৃতির উদ্দেশ্যে সংরক্ষিত রাখা হবে।
সোমবার দুপুর ১টা ১৮ মিনিটে উত্তরার দিয়াবাড়ি এলাকায় মাইলস্টোন স্কুলের ভবনে বিমানবাহিনীর একটি FT-7BGI মডেলের যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়। সঙ্গে সঙ্গে আগুন ধরে গেলে ভবনের একটি অংশ ভয়াবহ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তাৎক্ষণিকভাবে উদ্ধার কার্যক্রম শুরু হলেও প্রাণহানি এড়ানো সম্ভব হয়নি।
সোমবার রাতে এক ভিডিওবার্তায় প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “এটি এমন একটি দুর্ঘটনা, যা কল্পনার বাইরে। পুরো জাতি স্তব্ধ হয়ে গেছে। কীভাবে এই মর্মান্তিক ঘটনার মুখোমুখি হলাম—সে প্রশ্নের উত্তর আমাদের নিজেদের কাছেই নেই।” তিনি আরও জানান, সরকারের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারদের পাশে দাঁড়ানো হবে এবং দুর্ঘটনার পূর্ণ তদন্ত করা হবে।
মঙ্গলবার (২২ জুলাই) সারাদেশে একদিনের রাষ্ট্রীয় শোক পালন করা হয়। জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয় সব সরকারি, বেসরকারি ও বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ মিশনে। একইসঙ্গে সব ধর্মীয় উপাসনালয়ে নিহতদের আত্মার শান্তি ও আহতদের দ্রুত সুস্থতার জন্য বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করা হয়।