মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার স্বনামধন্য ইউনিভার্সিটি অব রেডল্যান্ডস থেকে প্রায় ৯৯ শতাংশ টিউশন ফি-র স্কলারশিপ পাওয়ার পরও ভিসা না পাওয়ায় থেমে গেল এক বাংলাদেশি তরুণের স্বপ্নযাত্রা। বছরে প্রায় ৬২ হাজার ডলারের এই স্কলারশিপে পড়াশোনা নিশ্চিত হলেও, ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাসের ভিসা অফিসার মাত্র দুটি প্রশ্নের পরেই তাকে ফিরিয়ে দেন—যা ভিসা প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা ও যুক্তিবোধ নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলছে।
২০২৫ সালের ১৫ জুলাই অনুষ্ঠিত এই সাক্ষাৎকারে শিক্ষার্থী নিজেকে সর্বোচ্চভাবে প্রস্তুত রেখেছিলেন। প্রথম প্রশ্ন ছিল, “তুমি কীভাবে পড়াশোনার খরচ চালাবে?” উত্তরে তিনি জানান, তার ৯৯% খরচ স্কলারশিপে কভার হচ্ছে এবং বাকি অংশ তার বাবা-মা বহন করবেন, যাদের সঞ্চয় রয়েছে ৭৫ হাজার ডলার। দ্বিতীয় প্রশ্ন ছিল, “পড়াশোনা শেষে কী করতে চাও?” জবাবে তিনি আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে জানান, বাংলাদেশে ফিরে একটি ডেটা অ্যানালিটিক্স কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করতে চান।
কিন্তু এই উত্তরগুলো দেওয়ার পর আর কোনো প্রশ্ন না করেই, আবেদনটি মার্কিন অভিবাসন আইনের ২১৪(b) ধারায় প্রত্যাখ্যান করা হয়। এমনকি তার আর্থিক কাগজপত্র বা বিশ্ববিদ্যালয়ের অফার লেটারও দেখার প্রয়োজন মনে করেননি অফিসার। ফলে শিক্ষার্থী এবং তার পরিবার গভীর হতাশায় পড়েছেন, যারা তার স্বপ্ন পূরণে প্রস্তুত ছিলেন অর্থনৈতিক ও মানসিক—দুই দিক থেকেই।
আরও পড়ুন
তরুণ শিক্ষার্থী বলছেন, “আমার যোগ্যতা, স্কলারশিপ, পরিবারের আর্থিক সামর্থ্য—সবকিছু থাকা সত্ত্বেও ভিসা না পাওয়া খুবই দুঃখজনক। আমি কেবল উচ্চশিক্ষা নিতে চেয়েছিলাম, দেশে ফিরে কিছু করতে চেয়েছিলাম।” তিনি জানালেন, আগামী ২০-২৫ দিনের মধ্যেই তিনি আবার আবেদন করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন এবং এবার আরও আত্মবিশ্বাস নিয়ে অংশ নিতে চান সাক্ষাৎকারে।
এই ঘটনা কেবল একজনের ব্যক্তিগত স্বপ্নভঙ্গ নয়; বরং এটি আরও বড় একটি প্রশ্ন তোলে—ভবিষ্যতের নির্মাতা তরুণরা কীভাবে একটি অনিশ্চিত এবং অনেক সময় অব্যাখ্যাত প্রক্রিয়ার মধ্যে নিজেদের ভবিষ্যৎ গড়ে তুলবে? এমনকি যখন তাদের সব ধরনের যোগ্যতা ও প্রস্তুতি থাকলেও সিদ্ধান্ত নির্ধারিত হয় মাত্র কয়েকটি প্রশ্নে।
তবু আশাবাদ রয়ে গেছে। তরুণ শিক্ষার্থী লড়াই চালিয়ে যেতে চান, এবং আমরা প্রত্যাশা করি—এবার তার স্বপ্ন সফল হবে। কারণ সত্যিকার উদ্যম ও প্রস্তুতির পেছনে লুকিয়ে থাকে বিজয়ের সম্ভাবনা।