হজ মৌসুম শেষে চলতি জুলাই থেকেই বাংলাদেশিসহ সব দেশের মুসলমানদের জন্য ওমরাহ ভিসা চালু করেছে সৌদি আরব। তবে এ বছর থেকে ভিসা প্রক্রিয়া ও সফর সংক্রান্ত বেশ কিছু নতুন নিয়ম চালু হওয়ায় যাত্রীদের ওপর খরচের বোঝা বেড়েছে। বাধ্যতামূলক করা হয়েছে নির্ধারিত অ্যাপ বা ওয়েবসাইটের মাধ্যমে হোটেল ও পরিবহন বুকিং, পাশাপাশি ভিসা ফি ধরা হয়েছে ৪৯০ সৌদি রিয়াল—যা আগের চেয়ে উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি।
হজ এজেন্সিগুলোর তথ্য মতে, অতীতে ট্রানজিট ফ্লাইটে একজন যাত্রীর ওমরাহ করতে গড়ে খরচ হতো ১ লাখ ২০ হাজার টাকা, এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ১ লাখ ৩৫ হাজার টাকায়। সরাসরি ফ্লাইটের ক্ষেত্রে আগে যেখানে ইকোনমি প্যাকেজে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকায় চট্টগ্রাম থেকে যাওয়া সম্ভব ছিল, সেখানে এখন সেই খরচ দাঁড়াচ্ছে অন্তত ১ লাখ ৭০ হাজার টাকায়।
চট্টগ্রামের হজ এজেন্সি ‘বিসমিল্লাহ ওভারসিজ’-এর কর্ণধার আবুল আনোয়ার জানান, “২০২৫ সালের জুন থেকে ‘নুসুক মাসার’ অ্যাপে হোটেল ও পরিবহন আগে থেকেই বুক করা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। নির্দিষ্ট অনুমোদিত তালিকা থেকে হোটেল বাছাই করতে হচ্ছে, যার ফলে তুলনামূলক সাশ্রয়ী হোটেল পাওয়া যাচ্ছে না। একাধিক যাত্রী একসাথে থেকে খরচ কমানোর সুযোগও নেই।”
আরও পড়ুন
আবুল আনোয়ার আরও বলেন, “মক্কায় এখন একটি কক্ষে সর্বোচ্চ ৪ জন এবং মদিনায় ৩ জন থাকার অনুমতি রয়েছে। ফলে ভাগাভাগি করে খরচ কমানোর সুযোগ কমে গেছে। এমনকি আগে ১৫০ রিয়ালে যে হোটেল মিলতো, এখন সেটির জন্য দিতে হচ্ছে ২৫০ রিয়াল।”
নতুন নিয়ম অনুযায়ী ভিসার পাশাপাশি আলাদাভাবে পরিবহন ও হোটেল বুকিংয়ের খরচও বহন করতে হচ্ছে যাত্রীদের। তাছাড়া নতুনভাবে বায়োমেট্রিক ডেটা সংগ্রহের জন্য নির্দিষ্ট ফি নির্ধারণ করা হয়েছে, যা আগে ছিল না। অনুমোদিত হোটেলের সীমিত সংখ্যাও খরচ বৃদ্ধির আরেকটি বড় কারণ বলে জানিয়েছে হজ এজেন্সিগুলো।
সৌদি আরব জানিয়েছে, ২০২৪ সালে ওমরাহ পালন করেছেন প্রায় ১ কোটি ৬৯ লাখ মুসলিম, যার মধ্যে বাংলাদেশি ছিলেন ২ লাখ ৩১ হাজার। ২০২৫ সালে ওমরাহ যাত্রীর সংখ্যা দেড় কোটিতে উন্নীত করার লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে, যেখানে বাংলাদেশ থেকে আড়াই লাখ মানুষের অংশগ্রহণ আশা করা হচ্ছে। তবে বাড়তি খরচের কারণে সেই লক্ষ্য পূরণে সংশয় দেখা দিয়েছে।