সকল অবকাঠামো ও সুযোগ-সুবিধা থাকা সত্ত্বেও দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ থাকা ঠাকুরগাঁও বিমানবন্দর চালু না করার কারণ জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। রোববার (২০ জুলাই) এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি শেষে বিচারপতি ফাহমিদা কাদের ও বিচারপতি সৈয়দ জাহেদ মনসুরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
একইসঙ্গে, বিমানবন্দরটি চালুর যৌক্তিকতা যাচাই করতে কমিটি গঠন না করার কারণেও রুল জারি করা হয়েছে। সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল একরামুল কবীর রোমেল বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, রিটটি দায়ের করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও ঠাকুরগাঁও জেলার রাণীশংকৈল উপজেলার বাসিন্দা অ্যাডভোকেট মো. কামরুজ্জামান। রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে সংশ্লিষ্ট সাত মন্ত্রণালয় ও দপ্তরের কর্তৃপক্ষকে।
আরও পড়ুন
রিটকারীর ভাষ্য অনুযায়ী, ১৯৪০ সালে ব্রিটিশ আমলে প্রতিষ্ঠিত এ বিমানবন্দরটি একসময় সামরিক ও বেসামরিক কাজে ব্যবহৃত হতো। বর্তমানে এটি চুয়াল্লিশ বছর ধরে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। অথচ এটি ভারতের ‘চিকেননেক’ অঞ্চলের সন্নিকটে হওয়ায় ভৌগোলিক ও কৌশলগত দিক থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি দাবি করেন, ভারতের অদৃশ্য হস্তক্ষেপ ও কৌশলগত চাপের কারণেই বিভিন্ন সরকার বিমানবন্দরটি চালুর উদ্যোগ থেকে বিরত থেকেছে।
রিট আবেদনে আরও বলা হয়, বিমানবন্দরটি চালু না থাকার ফলে প্রায় ৪৫ লাখ মানুষ অর্থনৈতিক ও সামাজিকভাবে বঞ্চিত হচ্ছে। বিশেষত ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়, দিনাজপুর ও নীলফামারীর একটি বড় অংশের মানুষ এ অঞ্চলের কেন্দ্রস্থলে বসবাস করেও ভ্রমণ ও ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। সৈয়দপুর বিমানবন্দরের অধিকাংশ যাত্রীই এ অঞ্চল থেকে যাতায়াত করেন, অথচ তা ব্যবহারে অতিরিক্ত সময়, খরচ ও ভোগান্তির মুখোমুখি হতে হয়।
আইনজীবী কামরুজ্জামান জানান, সরকার বিমানযাত্রীর অভাব দেখিয়ে বিমানবন্দরটি চালু করছে না—এ যুক্তি আজ বাস্তবতার সঙ্গে মেলে না। বর্তমানে এই অঞ্চলে বিমানচাহিদা ব্যাপকভাবে বেড়েছে এবং অসংখ্য ক্ষুদ্রশিল্প, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠছে। এসব দিক বিবেচনায় নিয়ে অবিলম্বে বিমানবন্দরটি চালুর দাবি জানান তিনি।
এর আগে গত ২ জুন সরকারকে লিগ্যাল নোটিশ দিয়েছিলেন অ্যাডভোকেট কামরুজ্জামান। ওই নোটিশে বিমানবন্দর চালু করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ এবং সম্ভাব্যতা, অর্থনৈতিক প্রভাব ও জাতীয় নিরাপত্তার প্রেক্ষাপট বিশ্লেষণ করে বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশের আহ্বান জানান তিনি।