বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের উড়োজাহাজে একের পর এক যান্ত্রিক ত্রুটি ফ্লাইট পরিচালনায় বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এসব ঘটনায় শুধু যাত্রীদের দুর্ভোগই বাড়ছে না, আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ছে রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী এই সংস্থাটি। সংশ্লিষ্ট মহলের আশঙ্কা, এর ফলে দেশি-বিদেশি যাত্রীদের আস্থায় চিড় ধরতে পারে এবং বিমানের নিয়মিত যাত্রীরাও মুখ ফিরিয়ে নিতে পারেন। তবে বিমান কর্তৃপক্ষ বলছে, যাত্রীদের নিরাপত্তার ক্ষেত্রে কোনো আপস করা হচ্ছে না এবং টিকিট বিক্রিতে এখন পর্যন্ত প্রভাব পড়েনি। বহরে শিগগিরই চারটি নতুন উড়োজাহাজ যুক্ত হওয়ার কথা রয়েছে।
সবশেষ ১৬ জুলাই দুবাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিমানের একটি বোয়িং ৭৮৭ এর চাকা ফেটে যাওয়ায় বিজি-১৪৮ ফ্লাইটটি নির্ধারিত সময়ে ঢাকা ছেড়ে আসতে পারেনি। এতে ভোগান্তিতে পড়েন ২২০ যাত্রী। স্থানীয়ভাবে বিকল্প চাকা না পাওয়ায় যাত্রীদের হোটেলে রাখা হয় এবং পরদিন ঢাকা থেকে নতুন চাকা পাঠানো হয়। উড়োজাহাজ মেরামতের পর শুক্রবার ফ্লাইটটি ঢাকায় ফিরে আসে।
এই মাসেই বিমানের একাধিক যান্ত্রিক ত্রুটির ঘটনা ঘটে। ২৭ জুন ব্যাংককগামী একটি ফ্লাইট পাঁচ ঘণ্টা বিলম্বে ছাড়ে, ৫ জুলাই আরেকটি ফ্লাইট উড্ডয়নের আগেই বাতিল করা হয় এবং একই দিনে মদিনা থেকে আসা ফ্লাইট চট্টগ্রামে অবতরণের পর রানওয়েতে আটকে পড়ে। এমনকি একটি ফ্লাইট উড্ডয়নের পর চাকা খুলে নিচে পড়ে যাওয়ার ঘটনাও ঘটে। এসবের পাশাপাশি পর্যাপ্ত উড়োজাহাজ না থাকায় অনেক রুটে ফ্লাইট কমিয়ে আনতে বাধ্য হচ্ছে বিমান।
আরও পড়ুন
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের জনসংযোগ বিভাগের মহাব্যবস্থাপক এবিএম রওশন কবীর জানান, ‘যাত্রী নিরাপত্তা নিশ্চিত করেই আমরা ফ্লাইট পরিচালনা করছি। কোনও ত্রুটি শনাক্ত হলে তা ঠিক না করে উড়োজাহাজ চলাচল করছে না। আন্তর্জাতিক নিয়ম অনুযায়ী যাত্রীদের হোটেলে রাখাসহ সব ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।’ তিনি জানান, নতুন দুটি উড়োজাহাজ লিজ ও দুটি কেনার প্রক্রিয়া চলছে, যা সমস্যার সমাধানে সহায়ক হবে।
এভিয়েশন বিশেষজ্ঞ কাজী ওয়াহিদুল আলম বলেন, বারবার এমন যান্ত্রিক ত্রুটির ঘটনায় বিমানের ইমেজ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘বহরের বেশিরভাগ উড়োজাহাজ পুরনো হওয়ায় বারবার ত্রুটি দেখা দিচ্ছে। যদিও বিমানের ইঞ্জিনিয়ারিং টিম দক্ষ, কিন্তু পুরনো যন্ত্রপাতিতে সমস্যা থেকেই যায়। তাই বিমানকে অবিলম্বে বহর নবায়ন ও রক্ষণাবেক্ষণে নজর দিতে হবে।’