জাতীয়তাবাদী রাজনীতির শীর্ষস্থানীয় নেতা ব্যারিস্টার নাসিরউদ্দিন অসীম বলেছেন, বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে গোপালগঞ্জ এক ধরনের ‘কেবলা’য় পরিণত হয়েছে। তিনি বলেন, “যেভাবে মুসলমানদের কেবলা সৌদি আরব, ঠিক তেমনি গোপালগঞ্জ যেন আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কেবলা হয়ে উঠেছে।” দায়িত্বশীল রাজনৈতিক দলগুলোকে তিনি পরামর্শ দেন, তারা যেন আবেগঘন অঞ্চল হিসেবে বিবেচিত গোপালগঞ্জকে রাজনৈতিক কর্মসূচিতে সাবধানতার সঙ্গে অন্তর্ভুক্ত করে।
ব্যারিস্টার অসীম বলেন, “আমার বক্তব্য এই নয় যে গোপালগঞ্জে কেউ রাজনৈতিক কর্মসূচি দিতে পারবে না। বরং বাংলাদেশের প্রতিটি বর্গইঞ্চি আমাদের নাগরিক অধিকারভুক্ত। কিন্তু যেহেতু গোপালগঞ্জে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিস্থল রয়েছে, তাই এ জেলায় কোনো অভিযান বা দখল নিয়ে বক্তব্য দিলে তা সংবেদনশীল পরিবেশ তৈরি করতে পারে।”
তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, ৫ আগস্ট ২০২৪ সালে স্বৈরাচার পতনের পরপরই বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক দল গোপালগঞ্জে একটি কর্মসূচি দিয়েছিল। সেই সময় দলটির সভাপতি জিলানী ও তাঁর পরিবার সন্ত্রাসী হামলার শিকার হন। তিনি বলেন, “আমি হাসপাতালে গিয়ে দেখেছি, তাঁর স্ত্রী ও সন্তান গুরুতর আহত হয়েছিলেন। তারা সেদিন প্রাণে বেঁচে গিয়েছিল, সেটাই সৌভাগ্য।”
আরও পড়ুন
সম্প্রতি গোপালগঞ্জে এনসিপি (জাতীয় নাগরিক পার্টি)-এর কর্মসূচি নিয়েও মন্তব্য করেন ব্যারিস্টার অসীম। তিনি বলেন, “গোপালগঞ্জ আওয়ামী লীগের শক্ত ঘাঁটি হলেও, অন্য রাজনৈতিক দলের সেখানে কর্মসূচি দেওয়ার অধিকার রয়েছে। আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ দল হলে, তারা যদি আক্রমণ করে, কিংবা স্থানীয় বাসিন্দারা করে—সেটা খতিয়ে দেখা উচিত, তবে বিষয়টি বিতর্কসাপেক্ষ।”
তরুণ নেতৃত্বসম্পন্ন এনসিপিকে অভিনন্দন জানিয়ে তিনি বলেন, “ওদের সাহসী নেতৃত্বকে আমি সাধুবাদ জানাই। তবে কখনও কখনও তাদের কিছু আচরণে মনে হয় তারা ‘গায়ে মানে না আপনি মোড়ল’ মনোভাব পোষণ করে। এটাই হয় যখন প্রত্যাশার তুলনায় প্রাপ্তি বেশি হয়ে যায়।”
শেষে তিনি বলেন, নবীন রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে এনসিপির আরও অভিজ্ঞতা প্রয়োজন। “তাদের সমালোচনা না করে বরং উৎসাহ দেওয়া উচিত। রাজনৈতিক পরিপক্বতা একদিনে আসে না—সেজন্য সংযম ও সহনশীলতার মাধ্যমে আমরা সবাই মিলে একটি সুস্থ রাজনীতির পরিবেশ গড়তে পারি,”—মন্তব্য করেন বিএনপির এই সিনিয়র নেতা।