বাংলাদেশের প্রধান আন্তর্জাতিক প্রবেশদ্বার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। বিদেশ থেকে আগত পর্যটক, প্রবাসী ও কূটনৈতিকদের কাছে এটি দেশের প্রথম পরিচয়। কিন্তু বাস্তবতা হলো—বিমানবন্দরের সার্বিক চিত্র এখন উদ্বেগজনক। নিরাপত্তা, সেবা ও অবকাঠামোগত দুর্বলতায় দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে।
নিরাপত্তাব্যবস্থায় রয়েছে বড় ধরনের ত্রুটি। স্ক্যানিং ও তদারকির ঘাটতির কারণে যাত্রীরা আতঙ্কে থাকেন। প্রবেশপথে পর্যাপ্ত চেকিং না থাকায় যেকোনো সময় বড় ধরনের নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি হতে পারে। উপরন্তু, বিমানবন্দর এলাকায় হর্ন বাজানো নিষিদ্ধ থাকলেও নিয়ম মানা হচ্ছে না—সাধারণ গাড়ি থেকে শুরু করে ভিআইপি বা মিডিয়া গাড়িও একই অপরাধে যুক্ত।
আরও পড়ুন
বিমানবন্দরের অবকাঠামোতেও স্পষ্ট অব্যবস্থাপনা। ধুলোমাখা রাস্তাঘাট, ভাঙাচোরা ফুটপাত, অপরিচ্ছন্ন পরিবেশ ও ডিজিটাল নির্দেশনার অভাব যাত্রীদের চোখে পড়ে প্রথম দর্শনেই। আধুনিক বিশ্বে যেখানে বিমানবন্দরগুলো পরিচ্ছন্নতা ও নান্দনিকতায় অগ্রগামী, সেখানে শাহজালালের চিত্র অনেকটা ব্যতিক্রম।
এক প্রবাসী যাত্রী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “প্রতিবার দেশে ফিরলেই মনে হয় আমরা যেন পেছনে পড়ে আছি। বিমানবন্দর একটা দেশের মুখ, কিন্তু এখানে সে পরিচয়টাই পাওয়া যায় না।”
বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক এস এম রাগিব সামাদ জানান, যাত্রীসংখ্যা ধারণক্ষমতার চেয়ে অনেক বেশি হওয়ায় সেবার মান কিছুটা ব্যাহত হচ্ছে। যেখানে বাৎসরিক যাত্রী ধারণক্ষমতা ৮০ লাখ, সেখানে গত বছর প্রায় ১ কোটি ২৫ লাখ যাত্রী যাতায়াত করেছেন। ফলে জনবল সংকট, চলমান আন্ডারপাস নির্মাণ ও অতিরিক্ত চাপ মিলিয়ে কিছুটা বিশৃঙ্খলা দেখা যাচ্ছে।
তবে আশার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, “চলমান উন্নয়নকাজ শেষ হলে বিমানবন্দরটি আন্তর্জাতিক মানে রূপ নেবে। সাময়িক অসুবিধা থাকলেও আমরা দ্রুত সমস্যাগুলো সমাধানে কাজ করছি।” যদিও কর্তৃপক্ষ আশাবাদী, বাস্তবের প্রতিদিনকার ভোগান্তি এখনই দ্রুত ও কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণের দাবি জানাচ্ছে।