রাজধানীর পুরান ঢাকার মিটফোর্ড হাসপাতালে নির্মমভাবে খুন হন ব্যবসায়ী চাঁদ মিয়া ওরফে সোহাগ। প্রকাশ্যে পিটিয়ে ও কুপিয়ে তাকে হত্যা করা হয়, এরপর শত শত মানুষের সামনে তার নিথর দেহে চলে বীভৎস নির্যাতন। ভাইরাল হওয়া সিসিটিভি ফুটেজে এই বর্বরতার চিত্র ধরা পড়ে, যা জনমনে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের কোতোয়ালি থানার ওসি মোহাম্মদ ইয়াসিন শিকদার জানিয়েছেন, এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে—তারা হলেন মাহমুদুল হাসান মহিন (৪১) ও তারেক রহমান রবিন (২২)। পুলিশ আরও জানায়, রবিনের কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তলও উদ্ধার করা হয়েছে। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত অন্যান্য আসামিদেরও শনাক্ত করা হয়েছে এবং গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
আরও পড়ুন
পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার সময় হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা চালু থাকলেও কেউ এগিয়ে আসেনি। সোহাগকে হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসক জানান, তিনি ঘটনাস্থলেই মারা যান। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মৃত্যুর পরও হামলাকারীরা থামেনি—লাশের ওপর লাফিয়ে, কিল-ঘুষি দিয়ে চলতে থাকে সহিংসতা। পুলিশের ধারণা, ব্যবসায়িক দ্বন্দ্ব ও পূর্ব শত্রুতার জেরেই এই নির্মম ঘটনা ঘটেছে।
নিহত সোহাগ মিটফোর্ড এলাকায় ‘সোহানা মেটাল’ নামে পুরোনো বৈদ্যুতিক কেবল ও ভাঙাড়ির ব্যবসা করতেন। স্থানীয়ভাবে জানা গেছে, বিদ্যুতের তামা ও তারের একটি সিন্ডিকেট পরিচালনা করতেন তিনি। এই ব্যবসার দখল নিতে অভিযুক্ত মহিন ও সারোয়ার হোসেন টিটু সোহাগের কাছে নিয়মিত চাঁদা চাইতেন এবং ৫০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ দাবি করতেন। এই বিরোধ থেকেই হত্যার সূত্রপাত বলে মনে করছে পুলিশ।
সোহাগের বোন মঞ্জুয়ারা বেগম কোতোয়ালি থানায় ১৯ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত ১৫-২০ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। আসামিদের বেশিরভাগই স্থানীয় যুবদলের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত বলে জানা গেলেও, তারা কোনো আনুষ্ঠানিক পদে আছেন কি না—তা নিশ্চিত করা যায়নি। পুলিশের তদন্ত ও গ্রেপ্তার অভিযান চলমান রয়েছে।