প্রবাসী বাংলাদেশিদের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সরবরাহ কার্যক্রম সম্প্রসারণে নতুন উদ্যোগ নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। বর্তমানে নয়টি দেশে চলমান এই সেবা আগামী ১৫ জুলাই থেকে জাপানে চালু হচ্ছে। এরপর যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, মালদ্বীপ, তুরস্ক, জর্ডান, দক্ষিণ আফ্রিকা, ওমান ও মিশরেও এ কার্যক্রম শুরু করা হবে বলে জানিয়েছে কমিশন। এ লক্ষ্যে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করছে ইসি।
ইসির এনআইডি শাখার মহাপরিচালক এ এস এম হুমায়ুন কবীর জানান, বর্তমানে সংযুক্ত আরব আমিরাত, সৌদি আরব, যুক্তরাজ্য, ইতালি, কুয়েত, কাতার, মালয়েশিয়া, অস্ট্রেলিয়া ও কানাডার ১৬টি স্টেশনে ভোটার কার্যক্রম চলছে। এই দেশগুলো থেকে ৪৭ হাজারের বেশি আবেদন জমা পড়েছে, যার মধ্যে ২০ হাজারের বেশি নাগরিককে ইতোমধ্যে ভোটার হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বিশ্বব্যাপী ৪০টি দেশে প্রায় ১ কোটি ৪০ লাখ বাংলাদেশি প্রবাসীর অবস্থান রয়েছে। সবচেয়ে বেশি প্রবাসী রয়েছেন সৌদি আরবে—প্রায় ৪০ লাখের বেশি, আর সবচেয়ে কম নিউজিল্যান্ডে—মাত্র ২,৫০০ জন। এসব তথ্য বিশ্লেষণ করে ধাপে ধাপে এনআইডি কার্যক্রম বিস্তারের পরিকল্পনা করছে নির্বাচন কমিশন।
আরও পড়ুন
এনআইডি কার্যক্রমের পাশাপাশি প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করার বিষয়েও কাজ চলছে। ইতোমধ্যে বুয়েট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও এমআইএসটি’র অধ্যাপকদের নিয়ে একটি বিশেষজ্ঞ টিম গঠন করা হয়েছে। এই টিম অনলাইন, পোস্টাল ও প্রক্সি ভোটিংয়ের সম্ভাব্য পদ্ধতি নিয়ে বিশ্লেষণ করছে। দলগুলোর মতামত গ্রহণ শেষে এখন সুপারিশ পর্যালোচনা করছে কমিশন।
ভোটার হতে আগ্রহী প্রবাসীদের জন্য কিছু তথ্য ও কাগজপত্র জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে, যেমন—বাংলাদেশি পাসপোর্ট, জন্ম নিবন্ধন, রঙিন ছবি এবং পূরণকৃত আবেদনপত্র। নির্ধারিত ক্ষেত্রে বাড়ির ঠিকানার ইউটিলিটি বিল, নিকাহনামা, স্বামী-স্ত্রীর এনআইডি, নাগরিকত্ব সনদ প্রভৃতি দলিলও লাগবে। তবে কিছু প্রমাণপত্র আত্মীয়ের মাধ্যমে দেশে জমা দেওয়ারও সুযোগ রাখা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালে তৎকালীন কমিশন প্রথমবারের মতো প্রবাসীদের জন্য এনআইডি কার্যক্রম চালু করে, যার সূচনা হয় সংযুক্ত আরব আমিরাত, মালয়েশিয়া ও যুক্তরাজ্যে। করোনার কারণে কার্যক্রম কিছুটা থমকে গেলেও ২০২২ সালে কাজী হাবিবুল আউয়াল কমিশন দায়িত্ব নেওয়ার পর তা পুনরায় গতিশীল হয়। বর্তমানে কমিশনের লক্ষ্য হলো সীমিত আকারে হলেও প্রবাসীদের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ তৈরি করা।