বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের যানবাহন শাখা নিয়ে ইতিপূর্বে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠলেও এবার প্রকাশ্যে এসেছে আরও উদ্বেগজনক তথ্য। অভিযোগ উঠেছে, এই শাখাকে ঘিরেই গড়ে উঠেছে একটি সুসংগঠিত মাদক সিন্ডিকেট, যার পেছনে রয়েছে কিছু প্রভাবশালী কর্মকর্তা-কর্মচারীর প্রত্যক্ষ মদদ। তারা দীর্ঘদিন ধরে বিমানবন্দর এলাকায় মাদক পরিবহন ও লেনদেনের সঙ্গে জড়িত বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সূত্র বলছে, যানবাহন শাখার কয়েকজন সুপারভাইজার ও ড্রাইভার শুধু মাদক নয়, চোরাচালান, জ্বালানি তেল চুরি এবং অন্যান্য অবৈধ পণ্যের পরিবহনের সঙ্গেও জড়িত। তাদের বিরুদ্ধে রয়েছে দায়িত্বের অপব্যবহার, ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে অবৈধ সুবিধা আদায়ের মতো গুরুতর অভিযোগ। এদের মধ্যে মো. রেজাউল হাসান নামের এক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে সরাসরি মাদক ব্যবসায় জড়িত থাকার তথ্য পাওয়া গেছে, যাকে কেউ কেউ ‘মাদক সম্রাট’ বলেও অভিহিত করছেন।
রেজাউল হাসান বর্তমানে শাখাটির সিডিউলিং সুপারভাইজার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন এবং তিনি উপ-মহাব্যবস্থাপক মাসুদ পারভেজ রানার ঘনিষ্ঠ বলে অভিযোগ রয়েছে। তার আশ্রয়ে থেকেই মাদক চক্রটি আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে বলে মনে করছেন সহকর্মীরা। অনেকে আবার মুখ খুলতেও ভয় পাচ্ছেন, কারণ অভিযোগকারীরা বদলি বা চাকরি হারানোর ঝুঁকিতে পড়তে পারেন বলে জানিয়েছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা।
আরও পড়ুন
রেজাউল হাসানের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ নিয়ে যোগাযোগের একাধিক চেষ্টা করেও তার কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের জনসংযোগ বিভাগের মহাব্যবস্থাপক এ বি এম রওশন কবীর বলেছেন, “মাদক সংক্রান্ত অভিযোগ প্রমাণিত হলে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। তদন্তের ভিত্তিতে বিভাগীয় ব্যবস্থা ও প্রয়োজনীয় আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”
বিমানবন্দর নিরাপত্তার প্রশ্নে এমন ঘটনায় জনমনে ব্যাপক উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, বিমানবন্দর এলাকার মতো স্পর্শকাতর স্থানে মাদকচক্র ও দুর্নীতির মদদদাতাদের দ্রুত চিহ্নিত করে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। অন্যথায়, এই ধরনের অনৈতিক তৎপরতা দেশের ভাবমূর্তিকেই প্রশ্নবিদ্ধ করবে।