ফেনীতে নামের আংশিক মিল থাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুটি হত্যা মামলায় সৌদি প্রবাসী নজরুল ইসলাম সাদ্দাম হাজারীকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। অথচ মামলার প্রকৃত আসামির নাম রিয়াদ ও তার পরিচয় ভিন্ন। গত ১৬ জুন শহরের এক বিপণিবিতান এলাকা থেকে নজরুলকে গ্রেপ্তার করে পরদিন আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। বর্তমানে তিনি নির্দোষ প্রমাণ সত্ত্বেও বন্দি রয়েছেন।
জানা যায়, প্রবাসী নজরুল ইসলাম সাদ্দাম হাজারী দীর্ঘদিন ধরে সৌদি আরবে বসবাস করছেন। তিনি ২৫ মে ছুটিতে দেশে ফেরেন। কিন্তু তার বাবার নাম মৃত আবুল খায়ের মিন্টুর সঙ্গে মামলার আসামি রিয়াদের বাবার নাম আংশিক মিলে যাওয়ায় র্যাব তাকে গ্রেপ্তার করে। মামলার মূল আসামি রিয়াদ ওরফে নুরুল হুদা বর্তমানে আত্মগোপনে থেকে দেশের বাইরে অবস্থান করছেন।
মামলার এজহারে রিয়াদ নামে যিনি উল্লেখিত, তিনি ফেনী যুবলীগের সহ-সম্পাদক এবং আওয়ামী লীগের একজন নেতার দেহরক্ষী হিসেবে পরিচিত। অভিযোগ রয়েছে, গত বছরের ৪ আগস্ট ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচিতে গুলিবর্ষণের ঘটনায় দায়ের হওয়া দুটি মামলায় তার নাম থাকলেও, তদন্তে ত্রুটির কারণে গ্রেপ্তার হন নিরীহ নজরুল।
আরও পড়ুন
র্যাব, পুলিশ এবং মামলার একটি বাদী বলছেন, গ্রেপ্তার ব্যক্তি আসল আসামি বলেই তাকে ধরা হয়েছে। তবে অন্য মামলার বাদী আফসার হোসেন দাবি করেন, তিনি র্যাব বা পুলিশকে কোনো আসামি শনাক্ত করেননি, বরং অধিকাংশ আসামির নাম তাকে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের পক্ষ থেকে দেওয়া হয়েছে।
নজরুলের পরিবার জানিয়েছে, গ্রেপ্তারের পর থেকে তারা আদালত ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ করলেও কোনো সমাধান পাননি। তার বড় বোন ফেরদৌস আরা রিনা বলেন, ভাইয়ের নির্দোষ প্রমাণ হাতে থাকলেও এখনও মুক্তি মিলছে না। প্রবাসে ফেরার তারিখ সামনে হওয়ায় পরিবার দুশ্চিন্তায়।
এদিকে নজরুলের আইনজীবী ও বিএনপির এক নেতা মেজবাহ উদ্দিন ভূঁইয়া জানান, মামলার চার্জশিট থেকে নজরুলের নাম বাদ দেওয়ার অনুরোধ জানানো হবে। একইসঙ্গে তার জামিন আবেদনও করা হচ্ছে। তিনি বলেন, একজন নিরীহ প্রবাসী যুবকের ভবিষ্যৎ যেন ভুল তদন্তের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সে বিষয়ে আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হচ্ছে।