ঢাকার মগবাজারে একটি আবাসিক হোটেলে সৌদি প্রবাসী মনির হোসেন, তার স্ত্রী স্বপ্না বেগম এবং ১৮ বছর বয়সী প্রতিবন্ধী ছেলে নাঈমের রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। পরিবার ও স্বজনদের দাবি, এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড হলেও পুলিশ প্রাথমিকভাবে বিষক্রিয়াকে মৃত্যুর সম্ভাব্য কারণ হিসেবে বিবেচনা করছে।
লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা মনির হোসেন সম্প্রতি সৌদি আরব থেকে দেশে ফেরেন ছেলের চিকিৎসার জন্য। শনিবার (২৮ জুন) সকালে তিনি পরিবারসহ আদ-দ্বীন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যান চিকিৎসকের সাক্ষাৎ পাওয়ার জন্য। তবে সিরিয়াল না পেয়ে মগবাজারের একটি আবাসিক হোটেলে রাত যাপন করেন তারা। রাতে হোটেলের খাবার খাওয়ার পর রাত গভীরেই তারা অসুস্থ হয়ে পড়েন।
আরও পড়ুন
পরদিন সকালে আত্মীয়দের সহযোগিতায় তিনজনকেই দ্রুত আদ-দ্বীন হাসপাতালে নেওয়া হয়। সকাল ১১টা থেকে ১২টার মধ্যে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মনির হোসেন, তার স্ত্রী ও ছেলে তিনজনই মারা যান। হাসপাতালের আইসিইউ ইনচার্জ মো. সেলিম হোসেন জানান, মৃতদের শরীরে বিষক্রিয়ার লক্ষণ পাওয়া গেছে, তবে ময়নাতদন্ত ছাড়া মৃত্যুর প্রকৃত কারণ নিশ্চিত করা যাচ্ছে না।
এ ঘটনার পর রমনা থানার গোয়েন্দা বিভাগ, সিআইডির ক্রাইম সিন ইউনিটসহ সংশ্লিষ্ট বাহিনী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে আলামত সংগ্রহ করেছে এবং সন্দেহভাজন দুইজনকে আটক করেছে। রমনা গোয়েন্দা বিভাগের ইনস্পেক্টর আক্তার হোসেন জানিয়েছেন, খাবার আত্মীয়স্বজনের মাধ্যমে সরবরাহ করা হয়েছিল বলে প্রাথমিক তথ্য পাওয়া গেছে।
এই মর্মান্তিক ঘটনার পর নিহতদের গ্রামের বাড়ি লক্ষ্মীপুরে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। গ্রামের লোকজন ও স্বজনদের আহাজারিতে পরিবেশ ভারী হয়ে উঠেছে। রামগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আবুল বাসার বলেন, খাবারের সাথে বিষক্রিয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। পরিবারের তিনজন সদস্যের একসঙ্গে এমন মৃত্যু কোনোভাবেই সহজে মেনে নেওয়া যাচ্ছে না বলে তিনি মন্তব্য করেন।