নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলার সন্তান মো. ফখরুল ইসলাম দীর্ঘদিন প্রবাসজীবন কাটিয়েছেন সৌদি আরবের মদিনায়। পরিবারের মুখে হাসি ফোটানোর স্বপ্ন নিয়ে পাড়ি জমিয়েছিলেন মরুপ্রান্তরে। কর্মস্থলের ধুলাবালি আর রোদে পোড়ানো কষ্টের মাঝেই তৈরি করছিলেন জীবন সংগ্রামের অধ্যায়। তবে সেই অধ্যায়ের সমাপ্তি ঘটল হঠাৎ—হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে চলে গেলেন না-ফেরার দেশে।
দীর্ঘ প্রবাসজীবন শেষে দেশে ফিরলেন ঠিকই, তবে জীবিত নয়—ফিরলেন কফিনে বন্দি হয়ে। শনিবার (২৮ জুন) বিকেলে তার নিজ এলাকা নবীপুর ইউনিয়নের দারুল কুরআন মডেল মাদরাসা মাঠে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয় ফখরুলকে। জানাজায় অংশ নেন শত শত স্বজন, প্রতিবেশী ও শুভাকাঙ্ক্ষী। উপস্থিত সবাই স্মৃতিচারণ করছিলেন একজন পরিশ্রমী, সদালাপী ও সহানুভূতিশীল মানুষের বিদায়ের কথা।
মো. ফখরুল ইসলাম ছিলেন ইসলাম পাটওয়ারী বাড়ির প্রয়াত আব্দুল হালিমের ছেলে। তার স্ত্রী ও দুই সন্তান রয়েছে। ১৩ জুন জুমার নামাজ শেষে কর্মস্থলে ফেরার পথে হঠাৎ স্ট্রোক করলে তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়, কিন্তু আর ফেরা হয়নি। তার এই আকস্মিক মৃত্যু শোকের ছায়া ফেলেছে এলাকায় এবং প্রবাসী বাংলাদেশি কমিউনিটিতেও।
আরও পড়ুন
জানাজায় উপস্থিত নোয়াখালী জেলা জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির মাওলানা সাইয়েদ আহমদ বলেন, “ফখরুল ছিলেন প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির একজন নির্ভরযোগ্য অভিভাবক। তিনি নতুন প্রবাসীদের পাশে দাঁড়াতেন, সাহায্যের হাত বাড়াতেন। তার মৃত্যুতে একটি যুগের অবসান ঘটল।”
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মো. বেলায়েত হোসেন সোহেল বলেন, “বিদেশে রোজগার করতে গিয়েছিলেন পরিবারে স্বচ্ছলতা ফেরাতে, অথচ ফিরলেন নিথর দেহ হয়ে। তার মতো একজন ভালো মানুষকে হারিয়ে আমরা শোকাহত।”
মোহাম্মদ ফখরুল ইসলামের মৃত্যু শুধু এক ব্যক্তির বিদায় নয়, বরং প্রবাসে জীবনের কঠোর বাস্তবতার এক নির্মম উদাহরণ। তিনি রেখে গেছেন গভীর ভালোবাসা, সম্মান আর অসংখ্য মানুষের অশ্রুসিক্ত বিদায়।