পিরোজপুরের ইন্দুরকানী উপজেলায় প্রেমঘটিত বিরোধের জেরে ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্য শহিদুল ইসলাম (৫২) ও তার বড় ভাইয়ের স্ত্রী মুকুল বেগমকে (৪০) কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। একই ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন ইউপি সদস্যের স্ত্রী রেহেনা বেগম। শুক্রবার (২৭ জুন) রাত সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার ৫ নম্বর চন্ডিপুর ইউনিয়নের চরবলেশ্বর ওয়ার্ডে এ মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ড ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ইউপি সদস্য শহিদুল ইসলামের সঙ্গে প্রবাসী ইউনুস শেখের স্ত্রীর বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের অভিযোগ দীর্ঘদিন ধরে চলছিল। এ নিয়ে এলাকায় একাধিকবার বিতর্ক তৈরি হয় এবং শহিদুল ইসলাম স্থানীয়দের হাতে আটকও হন। এমনকি নারী নির্যাতনের মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। সম্প্রতি কারামুক্ত হয়ে তিনি আবার ওই নারী সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করলে উত্তেজনা চরমে পৌঁছে।
আরও পড়ুন
শুক্রবার রাতে শহিদুল ইসলাম নিজ বাড়ির সামনে পুকুরঘাটে অবস্থান করছিলেন। এ সময় পূর্ব-পরিকল্পিতভাবে ইউনুস শেখ ও তার সহযোগীরা অতর্কিতে হামলা চালিয়ে তাকে কুপিয়ে হত্যা করে। তার চিৎকারে ছুটে আসেন স্ত্রী রেহেনা ও ভাবী মুকুল বেগম। তাদেরও ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর জখম করা হয়। ঘটনাস্থলেই মুকুল বেগম নিহত হন। গুরুতর আহত রেহেনাকে প্রথমে পিরোজপুর জেলা হাসপাতালে এবং পরে খুলনা মেডিকেলে স্থানান্তর করা হয়। তার অবস্থাও আশঙ্কাজনক।
নিহতের মেয়ে অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী তোহা মনি গণমাধ্যমকে জানায়, রাত ১১টার কিছু পর তার বাবা বাড়ি ফেরেন এবং পুকুরঘাটে বসেন। এ সময় পার্শ্ববর্তী ইউনুস শেখ ও তার লোকজন সেখানে হামলা চালিয়ে তার বাবাকে কুপিয়ে হত্যা করে। পরে তারা মা ও কাকীকেও আক্রমণ করে।
চন্ডিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মশিউর রহমান মঞ্জু বলেন, পূর্ব শত্রুতার জেরেই এ হত্যাকাণ্ড ঘটে থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তিনি।
ইন্দুরকানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মারুফ হোসেন জানান, ঘটনার পর অভিযান চালিয়ে মূল অভিযুক্ত ইউনুস শেখের বড় ভাই রফিকুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদের ধরতে অভিযান চলছে। নিহতদের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পিরোজপুর জেলা হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে এবং মামলার প্রস্তুতি চলছে।