মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলায় ইতালি ফেরত প্রবাসী হালিম খান হত্যার ঘটনায় তার শ্বশুরবাড়িতে আগুন দিয়েছেন ক্ষুব্ধ স্বজন ও গ্রামবাসী। বুধবার (২৫ জুন) বেলা ১১টার দিকে বদরপাশা ইউনিয়নের দারাদিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এতে একটি রান্নাঘর, ধানের গোলা ও চার কক্ষবিশিষ্ট ভবনের আসবাবপত্রসহ গুরুত্বপূর্ণ সামগ্রী পুড়ে যায়। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সোমবার রাতে হালিম খানকে তার শ্বশুরবাড়িতে ডেকে নিয়ে নির্মমভাবে পিটিয়ে ও গলায় ফাঁস দিয়ে হত্যা করা হয়। পরে চিকিৎসার কথা বলে মরদেহ রাজৈর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ফেলে রেখে পালিয়ে যায় স্ত্রী রেশমা বেগমসহ পরিবারের সদস্যরা। হত্যাকাণ্ড জানাজানি হলে এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। বুধবার সকালে নিহতের স্বজন ও এলাকাবাসী মিলিত হয়ে শ্বশুর সোমেদ চৌকিদারের বাড়িতে হামলা চালায় এবং অগ্নিসংযোগ করে।
রাজৈর থানার ওসি মোহাম্মদ মাসুদ খান জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে অবস্থান নেয়। ঘটনার পর একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে, তবে এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। পুলিশ অতিরিক্ত সতর্ক অবস্থানে রয়েছে যাতে পরিস্থিতি আরও অবনতি না ঘটে।
আরও পড়ুন
জানা গেছে, চার বছর আগে প্রেমের সম্পর্কের মাধ্যমে রেশমা ও হালিমের দ্বিতীয় বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই হালিম তার শ্বশুর সোমেদ চৌকিদারকে পর্যায়ক্রমে প্রায় ৬০ লাখ টাকা দেন। এমনকি বিদেশে থাকা অবস্থায় নিজের ব্যবহারের জন্য টাকা পাঠিয়ে মোটরসাইকেল কেনান, যা কিনা তার শ্যালক সবুজ চৌকিদারের নামে রেজিস্ট্রেশন করা হয়।
তিন মাস আগে হালিম দেশে ফেরার পর পাওনা টাকা ও মোটরসাইকেল নিয়ে বিরোধের সূত্রপাত ঘটে। শেষ পর্যন্ত এই আর্থিক বিরোধ ও পারিবারিক টানাপোড়েনই হালিমের মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়ায় বলে স্থানীয়রা দাবি করছেন। বর্তমানে তার মরদেহ মাদারীপুর সদর হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই অভিযুক্তদের কেউ এলাকা ছেড়ে পালিয়ে রয়েছে।