সিলেট নগরীতে এক প্রবাসীর বাড়ি দখল নিয়ে রাজনৈতিক পালাবদলের সঙ্গে সঙ্গে দখলদারও বদলে যায়। গত বছর ছাত্র-জনতার আন্দোলনের পর দেশে রাজনৈতিক পরিবর্তন ঘটে। এর পরই শহরের শামীমাবাদ এলাকার একটি বাড়ির দখল ছাত্রলীগ নেতাদের কাছ থেকে ছাত্রদল নেতার কাছে হস্তান্তর হয়। দীর্ঘদিন চেষ্টা করেও বাড়িটি দখলমুক্ত করতে না পারা যুক্তরাজ্যপ্রবাসী সুহেল বেগ শেষপর্যন্ত পুলিশের সহায়তায় গত শনিবার বাড়ির নিয়ন্ত্রণ ফিরে পান।
ভুক্তভোগী সুহেল বেগ ও তাঁর তিন ভাই মিলে ১৯৯৯ সালে বাগাবড়ি মৌজায় ৯.৮ শতক জমি কিনে ২০০৪ সালে সেখানে একটি চারতলা ভবন নির্মাণ করেন। অভিযোগ রয়েছে, ২০১৮ সালে ছাত্রলীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আলিম তুষার ও যুবলীগ নেতা শামীম খান জাল কাগজপত্র তৈরি করে বাড়িটি দখল করে ভাড়াটিয়া বসিয়ে দেন। ক্ষমতার পালাবদলের পর গত বছরের আগস্টে বাড়িটির দখল চলে যায় ছাত্রদলের মহানগর স্কুলবিষয়ক সম্পাদক এস এম ফাহিমের হাতে। এরপর থেকে তিনি ও তাঁর অনুসারীরা ভাড়াটিয়াদের কাছ থেকে ভাড়া আদায় শুরু করেন।
দখলের পর বাড়িটির নাম পরিবর্তন করে ‘মাতৃমহল’-এর পরিবর্তে ‘হোয়াইট হাউস’ রাখা হয়। প্রবাসী সুহেল বেগ দেশে ফেরার পর বাড়িটি পুনরুদ্ধারে উদ্যোগ নেন। চলতি বছরের ২ জুন কোতোয়ালি থানায় সাতজনের নাম উল্লেখ করে তিনি মামলা দায়ের করেন। থানার পক্ষ থেকে কাগজপত্র নিয়ে দুই পক্ষকে হাজির হতে বলা হলেও প্রতিপক্ষ হাজির হয়নি। পরে পুলিশ ও এলাকাবাসীর সহায়তায় অবশেষে বাড়ির দখল ফিরে পান তিনি।
আরও পড়ুন
সুহেল বেগ জানিয়েছেন, দখল পুনরুদ্ধার করতে পারলেও তিনি এখনো আতঙ্কে আছেন। তিনি বাড়ির মূল ফটকে তালা লাগানোর পর দখলদার পক্ষ থেকে পাল্টা তালা দেওয়া হয়। এতে তাঁর নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও কোতোয়ালি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আব্দুল আলীম বলেন, “পুলিশ ও স্থানীয়দের সহযোগিতায় সুহেল বেগ বর্তমানে তাঁর নিজ বাড়িতে অবস্থান করছেন।” ছাত্রদল নেতা এস এম ফাহিমের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁর ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
স্থানীয় ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি আব্দুল হেকিম জানান, “বাড়িটি আগে ছাত্রলীগ নেতাদের দখলে ছিল, পরে কে বা কারা সেখানে ছিলেন, তা জানা নেই। তবে এখন প্রবাসী মালিক সেখানে রয়েছেন বলেই শুনেছি।” প্রয়োজনে সহায়তার আশ্বাসও দিয়েছেন তিনি।