ফরিদপুরের এক প্রবাসী পুত্রের বিরুদ্ধে জমি লিখে না দেওয়ায় বৃদ্ধ বাবাকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। রোববার (২২ জুন) সরেজমিনে ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন নির্যাতনের শিকার বৃদ্ধ নূর ইসলাম বিশ্বাস। তিনি কান্নাজড়িত কণ্ঠে ছেলের প্রতি আক্ষেপ করে বলেন, “অন্যের জমিতে শ্রম দিয়ে বড় করেছি, দেনা করে বিদেশে পাঠিয়েছি, এখন সে আমাকে চিনেই না।”
ভুক্তভোগী নূর ইসলাম জানান, তার দুই ছেলে ও তিন মেয়ে। বড় ছেলে পরিবার নিয়ে আলাদা থাকেন। অসুস্থ স্ত্রীকে নিয়ে দিনমজুরের কাজ করে জীবন চালাচ্ছেন তিনি। ছোট ছেলে সজিব বিশ্বাসকে ২০১৬ সালে জমি বিক্রি করে সিঙ্গাপুর পাঠান। কিন্তু বিদেশে যাওয়ার পর থেকেই ছেলে তার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন।
তার অভিযোগ, দেশে ফিরে ছেলেটি শ্বশুরবাড়িতে অবস্থান নেয় এবং বাবার বসতভিটার জমি নিজের নামে লিখে দেওয়ার জন্য চাপ দিতে থাকে। এতে রাজি না হওয়ায় গত ১৯ জুন ছেলে ও তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন মিলে তাকে মারধর করে গুরুতর আহত করেন। পরে তিনি কোতোয়ালি থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন, যেখানে ছেলে সজিব, পুত্রবধূ তানজিলা, শ্যালক, শ্বশুরসহ ছয়জনের নাম উল্লেখ করা হয়।
আরও পড়ুন
বৃদ্ধ নূর ইসলাম বলেন, “এই জমিটুকুই আমার শেষ সম্বল। এটা লিখে দিলে আমায় ঘাড় ধরে বের করে দেবে। কোথায় যাব আমি? আমি শুধু বিচার চাই।” তিনি আরও অভিযোগ করেন, “আমার গলা টিপে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে, বুকে ঘুষি মারা হয়েছে, ছেলেই সব করেছে। এমনকি আমি হাসপাতালে আসার পর আমার গরু নিয়ে যেতে এসেছিল, প্রতিবেশীরা বাধা না দিলে নিয়ে যেত।”
ঘটনার বিষয়ে অভিযুক্ত সজিব বিশ্বাসের মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। তার বাড়িতেও কাউকে পাওয়া যায়নি, ফলে বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদউজ্জামান বলেন, “আমরা অভিযোগ পেয়েছি। এটি একটি পারিবারিক বিরোধ বলেই মনে হচ্ছে। আইনগত প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।”