সংযুক্ত আরব আমিরাতে (ইউএই) বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য নতুন ভিসা বন্ধ থাকার পেছনে বাংলাদেশের ভেতরের একটি ‘দুষ্টচক্রকে’ দায়ী করেছেন প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী। সোমবার (১৬ জুন) সংযুক্ত আরব আমিরাতের ফেডারেল অথরিটি ফর আইডেন্টিটি, সিটিজেনশিপ, কাস্টমস অ্যান্ড পোর্টস সিকিউরিটির (আইসিপি) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল সুহাইল সাঈদ আল খায়লির সঙ্গে বৈঠক শেষে নিজের ফেসবুক বিবৃতিতে তিনি এ কথা জানান।
লুৎফে সিদ্দিকী তার বিবৃতিতে উল্লেখ করেছেন, গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে আমিরাতে ভিসা ও আবাসন আইন লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশিরাই সবচেয়ে এগিয়ে। তাকে জানানো হয়েছে যে, ইউএইতে মোট অনিয়মকারীদের মধ্যে ২৫ শতাংশেরও বেশি বাংলাদেশি নাগরিক। বিশেষ দূত আরও জানান, তিনি একটি আন্তর্জাতিক রিক্রুটমেন্ট প্রতিষ্ঠানের সঙ্গেও কথা বলেছেন, যারা আফ্রিকা ও এশিয়ার বিভিন্ন দেশ থেকে কর্মী আনে। তারাও এই অভিযোগগুলোর সত্যতা নিশ্চিত করেছে। এছাড়া, চলতি বছরের মার্চে আংশিকভাবে ভিসা চালু হওয়ার পর কিছু মধ্যস্বত্বভোগীর অসাধু আচরণের কথাও তিনি শুনেছেন। ভবিষ্যতে বিভিন্ন ক্যাটাগরির ভিসা আবেদন যেমন পারিবারিক ভিসা, নিয়োগকর্তা পরিবর্তনের দেশীয় অনুমতি, পর্যটন ভিসা, দক্ষতা অনুযায়ী কর্মী ভিসা এবং নাবিকদের ভিসা আলাদাভাবে বিশ্লেষণ করা হবে।
বৈঠকে উভয় পক্ষই এই বিষয়ে একমত হয়েছে যে, ভিসা ইস্যুতে পারস্পরিক আস্থা ও সদিচ্ছার ভিত্তিতে দুই দেশের সরকারকে কাজ করতে হবে। এর মাধ্যমে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের একটি নতুন কাঠামো তৈরি হবে, যার ফলে বাণিজ্য, বিনিয়োগ এবং জনগণের মধ্যে সংযোগ আরও শক্তিশালী হবে।
আরও পড়ুন
উল্লেখ্য, ২০১২ সাল থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাতে বাংলাদেশিদের জন্য নতুন কর্মী ভিসা কার্যত স্থগিত রয়েছে। বিগত সরকার এবং বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে বিভিন্ন ধরনের প্রচেষ্টা চালানো হলেও এখন পর্যন্ত এই ভিসা জটিলতার কোনো কার্যকর সমাধান হয়নি। লুৎফে সিদ্দিকীর এই মন্তব্য সমস্যার মূলে থাকা অভ্যন্তরীণ বিষয়গুলোকে চিহ্নিত করার একটি নতুন দিক উন্মোচন করেছে, যা সমাধানে উভয় দেশের সমন্বিত পদক্ষেপ জরুরি।