কন্যাসন্তান জন্ম দেওয়ার কারণে এক নবজাতকের মায়ের শ্বশুরবাড়িতে মিষ্টির পরিবর্তে মাটি ও ইটের গুঁড়াভর্তি কার্টন পাঠানোর অভিযোগ উঠেছে স্বামী মোকছেদুল ইসলামের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার দাঁতভাঙ্গা ইউনিয়নে এবং তা জানাজানি হওয়ার পর এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রৌমারীর বড় ধনতোলা এলাকার বাসিন্দা সাহেব আলী ওরফে সব্দুল হকের ছেলে মোকছেদুল ইসলামের সঙ্গে একই ইউনিয়নের কাজাইকাটা গ্রামের আফতার আলীর মেয়ে আছমা খাতুনের বিয়ে হয় প্রায় এক বছর আগে। এই দম্পতির ঘরে সম্প্রতি একটি কন্যাসন্তান জন্ম নেয়।
গত ১১ জুন সকালে মোকছেদুল শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে তার শাশুড়ির হাতে একটি উপহারের কার্টন তুলে দেন। কিন্তু কার্টনটি খোলার পর দেখা যায়, সেখানে মিষ্টির পরিবর্তে রয়েছে মাটি ও ইটের গুঁড়া। এই ঘটনা আছমা ও তার পরিবারের জন্য ছিল চরম অপমানের।
আরও পড়ুন
আছমা খাতুন অভিযোগ করে বলেন, বিয়ের পর থেকেই স্বামী তার উপর নির্যাতন চালাতেন এবং গর্ভে সন্তান আসার পর নির্যাতনের মাত্রা আরও বেড়ে যায়। তিনি জানান, তার স্বামী বারবার বলতেন, ছেলে হলে সুখ, আর মেয়ে হলে দুঃখ—এই মানসিকতায়ই কন্যাসন্তান জন্মের পর তাকে এমন অসম্মানজনক পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়েছে।
এদিকে অভিযোগ অস্বীকার করে মোকছেদুল ইসলাম দাবি করেন, তিনি আসলে এক কেজি মিষ্টি ও কন্যার জন্য কিছু পোশাক নিয়ে গিয়েছিলেন। কার্টনে মাটি ও ইটের গুঁড়ার বিষয়টি সাজানো নাটক বলে তিনি দাবি করেন এবং বলেন, উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে তার সংসার ভাঙার চেষ্টা করা হচ্ছে।
দাঁতভাঙ্গা ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আবু সাঈদ বলেন, তিনি সরাসরি ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী নন, তবে স্থানীয়দের কাছ থেকে বিষয়টি শুনেছেন এবং খোঁজখবর নিচ্ছেন। এলাকাবাসীর মতে, এ ঘটনা নারী-অবমাননার একটি দৃষ্টান্ত এবং এটি সমাজে গভীর উদ্বেগ ও অসন্তোষ তৈরি করেছে।