২০২৫-২৬ অর্থবছরের জাতীয় বাজেট ঘোষণা করতে যাচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার, এমন এক সময় যখন বাংলাদেশ রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক স্থবিরতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। সংসদ কার্যকর না থাকায় এবারের বাজেট পেশ হবে ভিন্নধর্মীভাবে। আজ সোমবার অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশনের মাধ্যমে বাজেট উপস্থাপন করবেন। বাজেট ঘোষণার পর তা উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হবে। বিকেল ৩টায় অর্থ মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে বাজেট-সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করা হবে।
যেসব পণ্যের দাম কমতে পারে নতুন বাজেটে
এবারের বাজেটে যেমন কিছু পণ্যের ওপর শুল্ক ও ভ্যাট বাড়ানো হচ্ছে, তেমনি বেশ কিছু পণ্যের দাম কমানোর প্রস্তাবও থাকছে। বিশেষ করে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্য, জ্বালানি, কিছু আমদানিকৃত ও উৎপাদনশিল্প সংশ্লিষ্ট উপকরণে কর কমানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এতে করে সাধারণ জনগণ কিছুটা স্বস্তি পেতে পারেন।
জ্বালানি ও গ্যাসে ভ্যাট ছাড়, নিত্যপণ্যে উৎসে কর হ্রাস
এলএনজি আমদানিতে ১৫ শতাংশ ভ্যাট প্রত্যাহার এবং অপরিশোধিত জ্বালানি তেলে শুল্ক ৫ থেকে ১ শতাংশে নামিয়ে আনার প্রস্তাব রয়েছে। একইসঙ্গে স্থানীয়ভাবে ঋণপত্র খুলে খাদ্যপণ্য আমদানির ক্ষেত্রে উৎসে কর ১ শতাংশ থেকে অর্ধেকে নামানোর সিদ্ধান্ত আসতে পারে। এতে চাল, গম, ডাল, পেঁয়াজ, রসুন, লবণ, তেলসহ বহু নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম কমতে পারে।
আরও পড়ুন
চামড়া, চিনি, কাগজ ও নির্মাণ শিল্পে কর ছাড়
চামড়াশিল্পের ব্যবহৃত কিছু রাসায়নিক উপাদানে শুল্ক ৫ থেকে ১ শতাংশে নামিয়ে আনার প্রস্তাব করা হচ্ছে। চিনির দাম নিয়ন্ত্রণে আমদানি শুল্ক ৫০০ টাকা কমিয়ে ৪০০০ টাকা করার চিন্তা রয়েছে। এছাড়া কাগজশিল্পের ফেনোলিক রেজিন, স্যান্ডপেপার এবং নির্মাণ উপকরণে শুল্ক হ্রাসের মাধ্যমে এসব খাতের উৎপাদন খরচ কমানোর উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
টেকসই শিল্প ও ভোক্তা পণ্যেও কর হ্রাসের প্রস্তাব
পিভিসি পাইপ, কপার ওয়্যার, ক্রিকেট ব্যাট তৈরির কাঠ ও বিদেশি নন-অ্যালকোহলিক জুস আমদানিতে শুল্ক কমানোর প্রস্তাব থাকছে, যা এসব পণ্যের দাম কমিয়ে আনতে সাহায্য করতে পারে। একইসঙ্গে সংবাদপত্রে ব্যবহৃত নিউজপ্রিন্ট আমদানির কাস্টমস শুল্ক ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৩ শতাংশ করার চিন্তাভাবনা রয়েছে। এছাড়া টায়ার, টিউব, ব্রেক সু ও মার্বেল-গ্রানাইটের কাঁচামালের ওপরও শুল্ক হ্রাসের প্রস্তাব দেওয়া হচ্ছে।
নিবন্ধন ও ভূমি খাতে কিছু ছাড়
ভূমি নিবন্ধনের ক্ষেত্রে কাঠা ভিত্তিক ফি ও করের পরিবর্তে শতক ভিত্তিক হার নির্ধারণের চিন্তা করা হচ্ছে, যা নিবন্ধন ব্যয় হ্রাসে ভূমিকা রাখবে। একইসঙ্গে অগ্রিম কর কিছুটা কমানোরও প্রস্তাব রয়েছে। এসব উদ্যোগে বাজেট প্রস্তাবনা কিছুটা জনবান্ধব হওয়ার সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে, যদিও রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা এ বাস্তবায়নে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে পারে।