অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ আজ সোমবার (২ জুন) বিকেল ৩টায় জাতির উদ্দেশে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন করবেন। এবার বাজেটের আকার ধরা হয়েছে ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা। জাতীয় সংসদ বর্তমানে সক্রিয় না থাকায় এবারের বাজেট বক্তব্য সংসদে না তুলে বাংলাদেশ টেলিভিশনের মাধ্যমে সম্প্রচার করা হবে।
বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের জন্য ব্যাপক বরাদ্দ
নতুন বাজেটে অর্থ বিভাগের জন্য সর্বোচ্চ ৭ লাখ ৭২ হাজার ১০৬ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব রাখা হয়েছে। এছাড়া নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের জন্য ২ হাজার ৯৫৬ কোটি টাকা এবং প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের জন্য ৩ হাজার ৫৫৬ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে। জাতীয় সংসদের জন্য প্রস্তাবিত বরাদ্দ ২৩২ কোটি টাকা এবং রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের জন্য ৩৪ কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
ব্যয়ের পরিমাণ বাড়ছে আগের তুলনায়
২০২৫-২৬ অর্থবছরে সরকারের মোট ব্যয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১৩ লাখ ৬০ হাজার ২৬১ কোটি টাকা, যার মধ্যে দায়যুক্ত ব্যয় ৬ লাখ ৫৫ হাজার ৭৪৮ কোটি এবং অন্যান্য ব্যয় ৭ লাখ ৪ হাজার ৫১৩ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে ব্যয় ছিল ১২ লাখ ৯২ হাজার ২৯২ কোটি টাকা, অর্থাৎ নতুন বাজেটে ব্যয় আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে।
আরও পড়ুন
প্রধান খাতগুলোর জন্য বড় অঙ্কের বরাদ্দ
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জন্য ৩৫ হাজার ৪০৩ কোটি, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষার জন্য ৪৭ হাজার ৫৬৪ কোটি, স্বাস্থ্যসেবার জন্য ৩১ হাজার ২২ কোটি এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের জন্য ৪০ হাজার ৮৫১ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের জন্য বরাদ্দ ধরা হয়েছে ৪৭ হাজার কোটি টাকা।
বিনিয়োগ, অবকাঠামো ও কৃষি খাতে গুরুত্ব
নির্মাণ ও অবকাঠামো খাতে বড় অঙ্কের বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের জন্য ৩৮ হাজার ৪৯৬ কোটি, রেলপথ মন্ত্রণালয়ের জন্য ১১ হাজার ৯৪৪ কোটি এবং সেতু বিভাগের জন্য ৬ হাজার ২২ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব রাখা হয়েছে। কৃষি মন্ত্রণালয়ের জন্য বরাদ্দ ধরা হয়েছে ২৭ হাজার ২২৪ কোটি টাকা।
তথ্যপ্রযুক্তি ও মানবসম্পদ উন্নয়ন খাতেও বরাদ্দ
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের জন্য ২ হাজার ১৪৪ কোটি, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের জন্য ৪৩৮ কোটি এবং কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের জন্য ১২ হাজার ৬৭৮ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এ ছাড়া স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের জন্য ১০ হাজার ৮৮৬ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে।
এই বাজেটের মাধ্যমে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জাতীয় উন্নয়ন ও আর্থিক স্থিতিশীলতার লক্ষ্যপূরণে একটি ভারসাম্যপূর্ণ দৃষ্টিভঙ্গি উপস্থাপন করছে বলে মনে করছেন অর্থনীতি বিশ্লেষকেরা।