চার দশকেরও বেশি সময় ধরে বন্ধ থাকা ঠাকুরগাঁও বিমানবন্দর পুনরায় চালুর দাবিতে সরকারকে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. কামরুজ্জামান। সম্প্রতি পাঠানো এ নোটিশে তিনি সরকারের উচ্চপর্যায়ের ব্যক্তিদের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠনের অনুরোধ জানান, যারা বিমানবন্দর চালুর সম্ভাব্যতা ও প্রয়োজনীয়তা যাচাই করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।
নোটিশে উল্লেখ করা হয়, বিমানবন্দরটি পুনরায় চালু হলে ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়, দিনাজপুর, নীলফামারীসহ আশপাশের প্রায় ৪৫ লাখ মানুষ উপকৃত হবে। এটি শুধু স্থানীয় যোগাযোগ নয়, বরং নেপাল, ভুটান ও বাংলাদেশের ক্রসবর্ডার বাণিজ্য ও পর্যটনের ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। এছাড়া ভৌগোলিক দিক থেকে কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ এই অঞ্চল দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার ক্ষেত্রেও সহায়ক হতে পারে।
অ্যাডভোকেট কামরুজ্জামান অভিযোগ করেন, অতীতে বিভিন্ন সময়ে সরকারের পক্ষ থেকে বিমানবন্দরটি চালুর প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও তা কেবল কথার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থেকেছে। বাস্তবে কোনো দৃশ্যমান উদ্যোগ দেখা যায়নি। তিনি বলেন, “আমি আইনি লড়াই শুরু করেছি, প্রয়োজনে সুপ্রিম কোর্টে রিট দায়ের করব।”
আরও পড়ুন
তিনি আরও দাবি করেন, এই বিমানবন্দর চালু না করার পেছনে একটি ‘গোপন কৌশলগত কারণ’ রয়েছে। তার মতে, বিমানবন্দরটি ভারতের ‘চিকেননেক’ অংশের নিকটবর্তী হওয়ায় প্রতিবেশী দেশের অদৃশ্য হস্তক্ষেপে বিভিন্ন সরকার কার্যকর উদ্যোগ নিতে পারছে না। অথচ ব্রিটিশ আমলে এই বিমানবন্দর বেসামরিক ও সামরিক উভয় উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হতো এবং এখনো তার সেই গুরুত্ব রয়েছে।
স্থানীয় মানুষের ভোগান্তির চিত্র তুলে ধরে তিনি জানান, প্রতিদিন ঠাকুরগাঁও ও পঞ্চগড় থেকে প্রায় ৯০-১০০ জন যাত্রী বিমানে যাতায়াত করেন। কিন্তু নিকটবর্তী সৈয়দপুর বিমানবন্দরে পৌঁছাতে দীর্ঘ সময় লাগে ও ভোগান্তির শিকার হতে হয়। তিনি বলেন, বিমানবন্দর চালু হলে স্থানীয় শিল্প, কল-কারখানা ও অর্থনৈতিক অগ্রগতিও তরান্বিত হবে। তিনি এই দাবি বাস্তবায়নে সরকারকে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান।