একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াতে ইসলামী নেতা এ টি এম আজহারুল ইসলাম সর্বোচ্চ আদালতে আপিলের রায়ে খালাস পেয়েছেন। মঙ্গলবার (২৭ মে) প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে সাত সদস্যের আপিল বিভাগের বেঞ্চ এ ঐতিহাসিক রায় ঘোষণা করেন। এ সিদ্ধান্তের ফলে আজহারুল ইসলামের মুক্তিতে আর কোনো আইনি বাধা নেই বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবীরা।
এই রায় বাংলাদেশের বিচার ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ নজির হয়ে থাকল, কারণ এই প্রথমবার কোনো মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিকে আপিল বিভাগ খালাস দিল। আজহারের পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির, ব্যারিস্টার এহসান আবদুল্লাহ সিদ্দিক, ব্যারিস্টার ইমরান আবদুল্লাহ সিদ্দিক ও ব্যারিস্টার নাজিব মোমেন।
রায় ঘোষণার সময় আদালত প্রাঙ্গণে উপস্থিত ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর সিনিয়র নেতৃবৃন্দ। তাদের মধ্যে ছিলেন নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের, ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মাসুম, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খানসহ অন্যান্য নেতারা।
আরও পড়ুন
এর আগে, ২০১৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আজহারুল ইসলামকে ছয়টি মানবতাবিরোধী অপরাধের মধ্যে পাঁচটির জন্য মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করেন। অভিযোগে বলা হয়েছিল, তিনি রংপুর অঞ্চলে গণহত্যা, অপহরণ, ধর্ষণ, নির্যাতন, লুণ্ঠন ও অগ্নিসংযোগে জড়িত ছিলেন। তবে জামায়াত শুরু থেকেই এসব অভিযোগ ও রায়কে ‘প্রহসনমূলক’ বলে দাবি করে আসছিল।
আজহারের পক্ষে ২০১৫ সালের ২৮ জানুয়ারি খালাস চেয়ে ২৩৪০ পৃষ্ঠার আপিল দাখিল করা হয়, যার মধ্যে ৯০ পৃষ্ঠায় মূল আপিল ও ১১৩টি যুক্তি তুলে ধরা হয়েছিল। আপিল বিভাগ ২০১৯ সালে পূর্বের রায় বহাল রাখলেও পরবর্তীতে রিভিউ আবেদনের শুনানি শেষে এ বছর মে মাসে তাকে খালাস দেওয়া হলো।