আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের জানিয়েছেন, সরকার পতনের দিন তিনি ও তার স্ত্রী পাঁচ ঘণ্টা একটি বাথরুমে লুকিয়ে ছিলেন। ছাত্র-জনতার ব্যাপক গণআন্দোলনের প্রেক্ষাপটে গণভবন ও আশপাশের এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে তিনি নিজ বাসা ছেড়ে পাশের একটি বাড়িতে আশ্রয় নেন। কিন্তু সেই বাড়িও বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য হলে তাকে স্ত্রীসহ বাথরুমে আত্মগোপন করতে হয়। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য ওয়াল-এর নির্বাহী সম্পাদক অমল সরকারের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে তিনি এসব তথ্য প্রকাশ করেন।
সাক্ষাৎকারে ওবায়দুল কাদের বলেন, আন্দোলনকারীরা যখন তার অবস্থান জানতে পারে, তখন তারা সেই বাড়ির বাথরুম পর্যন্ত প্রবেশ করে। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হলেও, তাকে দেখে আচরণ পরিবর্তন করে। কেউ তাকে সেনাবাহিনীর হাতে তুলে দিতে বলে, কেউ আবার জনতার হাতে। তবে শেষ পর্যন্ত তারা তাকে মাস্ক ও ব্যাজ পরিয়ে নিরাপদে বাইরে নিয়ে যায় এবং একটি ইজিবাইকে করে স্ত্রীসহ স্থান ত্যাগে সাহায্য করে।
এই অভিজ্ঞতাকে ‘অলৌকিক রকমের ভাগ্যজয়’ হিসেবে উল্লেখ করে কাদের জানান, তিনি সেদিন প্রাণে বেঁচে গেছেন বলেই এখন কথা বলছেন। এরপর তিন মাস দেশে থেকেই পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেছেন এবং শ্রমিক অসন্তোষকে কাজে লাগিয়ে কিছু করতে চেয়েছেন। কিন্তু একে একে সবাই গ্রেফতার হওয়ায় নিরাপত্তার স্বার্থে দেশ ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেন।
আরও পড়ুন
আন্দোলনের সময় ছাত্রলীগ বা যুবলীগকে মাঠে নামানোর বিষয়ে কাদের বলেন, তিনি কখনও এমন নির্দেশ দেননি। বরং পরিস্থিতির চাপে সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন। ভিডিও ক্লিপ কেটে তার বক্তব্য বিকৃত করা হয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি।
সাক্ষাৎকারে ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, এ আন্দোলন হঠাৎ বিস্ফোরণের মতো ঘটে, যা গোয়েন্দা ব্যর্থতার ফল। নিজের ভূমিকা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ অনুযায়ী কাজ করেছেন, তবে কোনো চাঁদাবাজি বা দুর্নীতিতে তিনি জড়িত ছিলেন না। দীর্ঘদিন নীরবতার বিষয়ে তিনি জানান, শারীরিক অসুস্থতার কারণেই তা করেছিলেন।
সাক্ষাৎকারের শেষ দিকে তিনি নিজের অতীত, দলের প্রতি আনুগত্য এবং রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা নিয়েও কথা বলেন। বলেন, “ভুল হতে পারে, কিন্তু বিশ্বাসঘাতকতা করিনি। সময়ই বিচার করবে কে কী করেছে।”