ভূমিহীনদের কৃষিতে সম্পৃক্ত করার লক্ষ্যে সরকার নতুন করে কৃষি খাস জমি বন্দোবস্তের আবেদন কার্যক্রম চালু করেছে। ভূমি মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় সারাদেশে একযোগে শুরু হওয়া এই কার্যক্রমের আওতায় প্রবাসী, ভূমিহীন ও বিভিন্ন অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত নাগরিকরা সরকারি জমি বরাদ্দের জন্য আবেদন করতে পারবেন। এতে কৃষির উন্নয়ন ও সমাজের পিছিয়ে থাকা জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নের আশা করছে সংশ্লিষ্ট মহল।
এই সুবিধার আওতায় অগ্রাধিকার দেওয়া হবে প্রবাসী বাংলাদেশি (বিশেষ ক্যাটাগরি), অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারী, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও তাঁদের পরিবার, বিধবা নারী (যাদের কর্মক্ষম পুত্র রয়েছে), নদীভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার, ৫০ শতাংশের কম জমির মালিক এবং যাদের নিজস্ব ভিটেমাটি নেই — এমন নাগরিকদের।
সরকারি এ জমিগুলো কেবলমাত্র কৃষিকাজের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হবে। ধান, গম, ভুট্টা, সরিষা, কালাইসহ মৌসুমী শস্য উৎপাদনের জন্যই এগুলো ব্যবহার করতে হবে। ব্যবসা, দোকান, বসতঘর বা অন্য কোনো উদ্দেশ্যে জমির ব্যবহার নিষিদ্ধ। নিয়ম লঙ্ঘন করলে কৃষিকাজের বাতিল করা হবে।
আরও পড়ুন
আবেদনের জন্য নির্ধারিত ফর্ম পূরণ করে সংশ্লিষ্ট সহকারী কমিশনার (ভূমি)-এর কাছে জমা দিতে হবে। আবেদনপত্রের সঙ্গে পাসপোর্ট সাইজ ছবি, নাগরিকত্ব সনদ ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের সত্যায়ন সংযুক্ত করতে হবে। আবেদন একক বা যৌথ উভয়ভাবেই গ্রহণযোগ্য। প্রতিটি পরিবার সর্বোচ্চ ১ একর (প্রায় ৩ বিঘা) জমি পেতে পারে।
আবেদন জমা দেওয়ার পর ইউনিয়ন ও উপজেলা কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তা জেলা প্রশাসকের কাছে পাঠাবেন। জেলা কমিটি যাচাই-বাছাই করে চূড়ান্ত সুপারিশ করলে, অনুমোদনের ১৫ দিনের মধ্যে এক টাকার সেলামির বিনিময়ে জমির দলিল প্রস্তুত করবেন সহকারী কমিশনার (ভূমি)। এরপর জমির খতিয়ান ও হোল্ডিং নম্বর বরাদ্দপ্রাপ্ত ব্যক্তির নামে নিবন্ধিত হয়ে জমি বুঝিয়ে দেওয়া হবে।
তবে এই জমি বিক্রি বা হস্তান্তরের সুযোগ থাকবে না। কেবলমাত্র উত্তরাধিকার সূত্রে ভোগ দখলের নিয়ম বলবৎ থাকবে। সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, সরকারের এ উদ্যোগ কৃষিভিত্তিক অর্থনীতিকে আরও শক্তিশালী করবে এবং ভূমিহীন জনগোষ্ঠীর মাঝে স্থায়ী স্বচ্ছলতা এনে দেবে।