জীবিকার তাগিদে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতে পাড়ি জমিয়েছিলেন টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী উপজেলার পাঁচপটল গ্রামের ভ্যানচালক বাবলু মিয়া। উদ্দেশ্য ছিল পরিবার-পরিজনের জন্য একটু স্বচ্ছলতা আনা। কিন্তু সেই স্বপ্নই এখন তার জীবনের সবচেয়ে বড় দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়েছে। প্রতারণার শিকার হয়ে আজ তিনি স্ত্রী ও দুই সন্তানসহ দালালের বাড়ির সামনে অবস্থান করছেন ক্ষতিপূরণ ও ন্যায়ের দাবিতে।
ভুক্তভোগী বাবলু মিয়ার অভিযোগ, কেরামজানি এলাকার দালাল আতাউর রহমান সজীব ৪ লাখ ৮০ হাজার টাকার বিনিময়ে তাকে সৌদি আরবে পাঠান। তবে কাজের ভিসার আশ্বাস দিলেও পরে তিনি বুঝতে পারেন তাকে পাঠানো হয়েছে ভ্রমণ ভিসায়। আকামা না থাকায় সেখানে তিন মাস থাকার পর তাকে গ্রেফতার করে জেলে পাঠানো হয়। জেল খেটে দেশে ফিরে এসে বাবলু আর্থিকভাবে একেবারে নিঃস্ব হয়ে পড়েন।
বিদেশে পাঠানোর খরচ জোগাতে বাবলু তার ভ্যান বিক্রি, জমি বন্ধক এবং সুদে টাকা নিয়ে সজীবকে দিয়েছিলেন। কিন্তু দেশে ফিরে পাওয়ার আশ্বাস পেলেও কোনো অর্থ ফেরত পাননি। শেষ পর্যন্ত স্ত্রী ও শিশু সন্তানদের নিয়ে গত ছয় দিন ধরে সজীবের বাড়ির সামনে বসে আছেন ন্যায্য ক্ষতিপূরণের দাবিতে। তার বক্তব্য, “এভাবে প্রতারণা করে আমাদের পরিবারটাকে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। এখন টাকা না পেলে মরণের পথ ছাড়া গতি নেই।”
আরও পড়ুন
এ ঘটনায় বাবলুর স্ত্রী মেহেরুন, স্থানীয় রাজনৈতিক ও সামাজিক নেতৃবৃন্দ, এবং এলাকাবাসীও দালাল সজীবের শাস্তি দাবি করেছেন। অভিযুক্ত সজীব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, কিছু প্রভাবশালী মহল বাবলুকে ব্যবহার করে তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে।
ধনবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও থানার ওসি জানিয়েছেন, অভিযোগ পাওয়া গেছে এবং বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এলাকাবাসীও এ ঘটনায় প্রশাসনের কঠোর পদক্ষেপ কামনা করছেন, যাতে ভবিষ্যতে আর কেউ এ ধরনের প্রতারণার শিকার না হয়।