সিলেটের গোয়াইনঘাটে প্রবাসী তেরা মিয়া হত্যা মামলায় দীর্ঘ ১৫ বছর পর রায় ঘোষণা করেছে আদালত। সোমবার (১৯ মে) সিলেটের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ৫ম আদালতের বিচারক ঝলক রায় এই রায় ঘোষণা করেন। রায়ে তিন সহোদরকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেওয়া হয় এবং একই সঙ্গে তাদের প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছর করে বিনাশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়। অপর দুই ভাইকে খালাস দেওয়া হয়েছে।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন—গোয়াইনঘাট উপজেলার নয়াপাড়া (বীরমঙ্গল হাওর) এলাকার মৃত আব্দুল করিমের তিন ছেলে: আব্দুল কাদির (৪০), আ. নূর (৩৫) ও আ. জলিল (২৫)। খালাসপ্রাপ্তরা একই পরিবারের আ. শুকুর (৩২) ও রহমত উল্লাহ (২৮)। রায় ঘোষণার সময় পাঁচ আসামিই আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
মামলার বিবরণে জানা যায়, জমিসংক্রান্ত বিরোধের জেরে ২০১০ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি রাত ৮টার দিকে প্রবাস ফেরত তেরা মিয়াকে তাঁর বাড়ির বারান্দা থেকে টেনে এনে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করা হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে গোয়াইনঘাট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। পরদিন নিহতের ভাই সুরুজ মিয়া বাদী হয়ে পাঁচজনকে আসামি করে থানায় হত্যা মামলা করেন।
আরও পড়ুন
মামলার তদন্ত শেষে পুলিশ ওই বছরের ৩০ জুন আদালতে চার্জশিট দাখিল করে। ২০১১ সালের ১০ এপ্রিল আদালত আনুষ্ঠানিকভাবে বিচার কার্যক্রম শুরু করে। দীর্ঘ সাক্ষ্যগ্রহণ পর্বে ২৪ সাক্ষীর মধ্যে ১৪ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়।
রায়ে তিন আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় তাদের সাজা প্রদান করা হয়। তবে অপর দুই আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ না হওয়ায় আদালত তাদের খালাস দেন। মামলার বাদী সুরুজ মিয়া এ রায়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, “আমরা উচ্চ আদালতে আপিল করব।” রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন এপিপি অ্যাডভোকেট খালেদ আহমেদ জুবায়ের ও অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলাম। আসামিদের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট নুরুল হক ও মো. হেলাল উদ্দিন।