চীনের সঙ্গে চুক্তি, যেসব সুবিধা পাবে বাংলাদেশ

Agreement with china, benefits that bangladesh will get

বাংলাদেশ সম্প্রতি ‘মোংলা বন্দর সুবিধাদি সম্প্রসারণ ও উন্নয়ন’ প্রকল্পের জন্য চীনের সঙ্গে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। বন্দর সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ, ব্যবহারকারী ও অংশীজনরা মনে করছেন, এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমুদ্রবন্দরটি একটি আঞ্চলিক বাণিজ্যিক কেন্দ্রে পরিণত হবে এবং বন্দরের সক্ষমতা বহু গুণ বাড়বে।

মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের (এমপিএ) উপপরিচালক মো. মাকরুজ্জামান জানান, গত ২৫ মার্চ এমপিএ এবং চীন সরকারের চায়না সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন করপোরেশন (সিসিইসিসি)-এর মধ্যে একটি জিটুজি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। এর আগে, ২ ফেব্রুয়ারি প্রকল্পটি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) দ্বারা অনুমোদিত হয়েছিল।

প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৪,০৬৮.২২ কোটি টাকা। এর মধ্যে বাংলাদেশ সরকার দেবে ৪৭৫.৩২ কোটি টাকা এবং চীন সরকার ঋণ সহায়তা হিসেবে দেবে ৩,৫৯২.৯০ কোটি টাকা।

প্রকল্পের আওতায় ৩৬৮ মিটার দীর্ঘ দুটি কনটেইনার জেটি, একটি আধুনিক কনটেইনার টার্মিনাল, ডেলিভারি ইয়ার্ড, বহুতল গাড়ি পার্কিং, সানকেন রেক অপসারণ ব্যবস্থা, প্রধান সড়ক উন্নয়ন ও শিট পাইলিং নির্মাণ করা হবে। এছাড়াও, ৮৭,৬০০ বর্গমিটার লোডেড কনটেইনার ইয়ার্ড, ৩৪,১ ৭০ বর্গমিটার খালি কনটেইনার ইয়ার্ড এবং ৪,২৬০ বর্গমিটার বিপজ্জনক পণ্য হ্যান্ডলিং ইয়ার্ড নির্মাণ করা হবে।

প্রকল্পটিতে আধুনিক পণ্য হ্যান্ডলিং যন্ত্রপাতি ও স্বয়ংক্রিয় অপারেশনাল সিস্টেম যুক্ত করা হবে, যার মধ্যে বাংলাদেশের প্রথম চালকবিহীন ক্রেন সিস্টেমও থাকবে। এই কাজ শেষ হলে মোংলা বন্দরের বার্ষিক পণ্য পরিবহন ক্ষমতা ১৫ মিলিয়ন মেট্রিক টনে উন্নীত হবে এবং কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ের সক্ষমতা ১.৫ লাখ টিইউ থেকে বেড়ে ৪ লাখ টিইউ হবে।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও গবেষক ড. মো. সামিউল হক মনে করেন, এই বিনিয়োগ শুধু অবকাঠামোগত উন্নয়নই নয়, বরং দেশের অর্থনৈতিক ও কৌশলগত সক্ষমতাও বৃদ্ধি করবে। মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল শাহীন রহমান জানান, প্রকল্পটি সম্পন্ন হলে মোংলা বন্দর একটি সম্পূর্ণ স্বয়ংক্রিয় বন্দরে পরিণত হবে এবং বন্দরের কার্যকারিতা আরও উন্নত হবে।

মোংলা পোর্ট বার্থ অ্যান্ড শিপ অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সাঈদ জাহিদ হোসেন বলেন, উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ পুরোপুরি শেষ হলে বন্দরের গুরুত্ব বহুগুণে বেড়ে যাবে। খুলনা সিভিক সোসাইটির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট বাবুল হাওলাদার মনে করেন, চীনের সঙ্গে মোংলা বন্দরের আধুনিকায়ন চুক্তি দেশের জন্য ইতিবাচক, তবে স্থানীয় জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার দিকে সরকারের নজর রাখা উচিত।

আরও দেখুন:

whatsappচ্যানেল ফলো করুন

প্রবাস টাইমে লিখুন আপনিও। প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির নানা আয়োজন, ঘটনা-দুর্ঘটনা, প্রবাসীদের সুযোগ-সুবিধা, সমস্যা-সম্ভাবনা, সাফল্য, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের খবর, ছবি ও ভিডিও আমাদের পাঠাতে পারেন news@probashtime.com মেইলে।

Probashir city web post