সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার লন্ডন থেকে দেশে ফেরার বিমানযাত্রায় অপ্রত্যাশিত পরিবর্তন দেখা গেছে। আগামী ৫ মে সোমবার, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি নিয়মিত ফ্লাইটে তার দেশে ফেরার কথা থাকলেও, ওই ফ্লাইটের দায়িত্বে থাকা দুইজন কেবিন ক্রুকে আকস্মিকভাবে পরিবর্তন করা হয়েছে। এই ঘটনাটি বিমান কর্তৃপক্ষের অভ্যন্তরীণ কার্যক্রম এবং রাজনৈতিক মহলে নানা প্রশ্ন তৈরি করেছে।
গোয়েন্দা সূত্রের তথ্যানুসারে, সরকারি বিরোধী ষড়যন্ত্র এবং আওয়ামী লীগের সাথে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগের ভিত্তিতে ২ মে শুক্রবার রাতে আল কুবরুন নাহার কসমিক ও মো. কামরুল ইসলাম বিপোন নামের দুই কেবিন ক্রুকে ফ্লাইট থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। পরিকল্পনা অনুযায়ী, শনিবার ঢাকা থেকে লন্ডনগামী ফ্লাইটের ক্রুরাই রোববার খালেদা জিয়ার ফিরতি ফ্লাইটে দায়িত্ব পালন করার কথা ছিল। তবে, একটি সিন্ডিকেট চক্রের মাধ্যমে আওয়ামী সুবিধাভোগী ক্রুরা শুক্রবার দুপুরে ওই ফ্লাইটে অন্তর্ভুক্ত হন। পরবর্তীতে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে তাদের বাদ দেওয়া হয়।
আল কুবরুন নাহার কসমিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি পূর্ববর্তী সরকারের সাথে ঘনিষ্ঠতার কারণে নিয়মিত শেখ রেহানার ফ্লাইট পরিচালনা করতেন এবং আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সংগঠনের সাথে তার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ যোগাযোগ ছিল। এমনকি, শেখ হাসিনার এপিএস গাজী হাফিজুর রহমান লিকুর সাথেও তার ঘনিষ্ঠতা ছিল। তার চাকরি জীবনে ১৮ বার কারণ দর্শানোর নোটিশ এবং একাধিকবার গ্রাউন্ডেড হওয়ার মতো ঘটনা ঘটে।
আরও পড়ুন
অন্যদিকে, জুনিয়র পার্সার কামরুল ইসলাম বিপোনের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি গত ১৫ বছর ধরে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে সরাসরি যুক্ত ছিলেন। তিনি নিয়মিত ১৫ আগস্টে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে ফুল দিতে যেতেন, শেখ কামালের জন্মদিনে ফুটবল ম্যাচের আয়োজন করতেন এবং শেখ রাসেল দিবস পালনের অন্যতম উদ্যোক্তা ছিলেন।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট সার্ভিস প্ল্যানিং অ্যান্ড শিডিউলিংয়ের ভারপ্রাপ্ত ম্যানেজার সীতারা নাসরিন নিশি জানিয়েছেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশেই কসমিক ও বিপোনকে খালেদা জিয়ার ফ্লাইটে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। এই ঘটনাটি বিমান কর্তৃপক্ষের অভ্যন্তরীণ ব্যবস্থাপনা এবং রাজনৈতিক প্রভাব নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু করেছে।