রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে জাহাজ শ্রমিক জিহাদ সরদার (৩০) হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচিত হয়েছে। পুলিশ জানতে পেরেছে, ত্রিভুজ পরকীয়ার জেরে তিনি প্রাণ হারিয়েছেন। এই ঘটনায় গ্রেফতারকৃত নারী আসামি আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। গত রোববার গোয়ালন্দ উপজেলার পদ্মা নদীর অন্তর মোড় এলাকা থেকে জিহাদের মাথাবিহীন মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তবে, এখনো পর্যন্ত তার বিচ্ছিন্ন মাথার সন্ধান মেলেনি। মরদেহের পোশাক ও শরীরের চিহ্ন দেখে পরিবারের সদস্যরা তাকে শনাক্ত করেন।
এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নিহত জিহাদের বাবা সহিদ সরদার বাদী হয়ে গোয়ালন্দ ঘাট থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় একই গ্রামের দুবাই প্রবাসী মো. খলিলের স্ত্রী সুমানা পারভীন সেতু (২৪), জিহাদের চাচা বাবলু সরদারের ছেলে সোহাগ সরদার (২৭) ও প্রতিবেশী হারেজ বেপারীর ছেলে হৃদয় বেপারীকে (২৪) আসামি করা হয়। এদের মধ্যে প্রধান আসামি সুমানা পারভীন সেতু বুধবার রাজবাড়ীর আদালতে হত্যাকাণ্ডে নিজের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছেন।
তদন্তে জানা গেছে, নিহত জিহাদের সঙ্গে সুমানা পারভীন সেতুর পরকীয়ার সম্পর্ক ছিল। একইসঙ্গে হৃদয় ও সোহাগের সঙ্গেও তার অবৈধ সম্পর্ক ছিল। এই অবৈধ সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার জন্য সুমানা তার স্বামীর ও বাবার বাড়ি ছেড়ে হৃদয়দের বাড়ির পাশে সন্তান নিয়ে ভাড়া বাড়িতে বসবাস করতেন। ঘটনার রাতে, কর্মস্থল থেকে ফিরে জিহাদ গভীর রাতে সুমানার সঙ্গে দেখা করতে গেলে হৃদয় ও সোহাগের যোগসাজশে তাকে নদীর পাড়ে নিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করা হয় এবং মরদেহ ও মাথা নদীতে ফেলে দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন
গোয়ালন্দ ঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ রাকিবুল ইসলাম জানান, গ্রেফতারকৃত সুমানা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় পলাতক আসামি হৃদয়সহ আরও কেউ জড়িত আছে কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে এবং দ্রুত তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। পুলিশ এই ঘটনার মূল রহস্য উদঘাটনে জোর তৎপরতা চালাচ্ছে।