অরাজনৈতিক ইসলামী সংগঠন ‘হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ’ চারটি প্রধান দাবিতে আগামী ৩ মে ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মহাসমাবেশের ডাক দিয়েছে। একই সঙ্গে, বাংলাদেশ থেকে মায়ানমারের রাখাইনে মানবিক সহায়তা পৌঁছানোর জন্য করিডর দেওয়ার সরকারের নীতিগত সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে সংগঠনটি।
মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল দুপুরে রাজধানীর খিলগাঁওয়ের জামিয়া ইসলামিয়া মাখজানুল উলুম মাদরাসায় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই ঘোষণা দেওয়া হয়। মহাসমাবেশের সার্বিক প্রস্তুতি সম্পর্কে জানাতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, আগামী ৩ মে সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এই মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।
আরও পড়ুন
এতে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব ও বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মামুনুল হক বলেন, ‘বাংলাদেশকে ব্যবহার করে সাম্রাজ্যবাদী শক্তি তাদের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করবে, দেশপ্রেমিক শক্তি হিসেবে হেফাজতে ইসলাম কোনোভাবেই এটি সমর্থন করে না এবং এর তীব্র নিন্দা জানায়। আমরা এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাব।’ উল্লেখ্য, সরকার জাতিসংঘের অনুরোধে কিছু শর্তসাপেক্ষে মায়ানমারের বেসামরিক জনগণের জন্য মানবিক সহায়তা পৌঁছে দিতে একটি করিডর স্থাপনের নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
হেফাজতে ইসলাম তাদের মহাসমাবেশে যে চারটি দাবি উত্থাপন করেছে সেগুলো হলো—নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন ও কমিশন বাতিল করা, সংবিধানে বহুত্ববাদের পরিবর্তে আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস পুনর্বহাল করা, ‘ফ্যাসিবাদী’ সরকারের আমলে দায়ের করা সকল রাজনৈতিক মামলা প্রত্যাহার এবং শাপলা চত্বরসহ সকল ‘গণহত্যা’র বিচার করা, ও ফিলিস্তিন এবং ভারতে মুসলিম গণহত্যা ও নিপীড়ন বন্ধের দাবি জানানো।
এ সময় হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব মাওলানা সাজিদুর রহমান বলেন, ‘যে কমিশন কোরআন ও সুন্নাহর বিরোধী সুপারিশ করতে পারে, বাংলাদেশের মানুষ সেই কমিশন মানে না। সংবিধানে বহুত্ববাদ নয়, আল্লাহর ওপর আস্থা ও বিশ্বাস ফিরিয়ে আনতে হবে।’ এদিন সকাল ৮টায় মাখজানুল উলুম খিলগাঁও মাদরাসায় মহাসমাবেশ বাস্তবায়ন কমিটির এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। হেফাজতের মহাসচিব মাওলানা সাজিদুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় সংগঠনের কেন্দ্রীয়, মহানগর ও জোন কমিটির দায়িত্বশীল নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির মাওলানা মাহফুজুল হক, মাওলানা মহিউদ্দিন রাব্বানী, ড. আহমদ আব্দুল কাদের, মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস কাসেমী, মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী, মাওলানা খুরশিদ আলম কাসেমী, মাওলানা জহুরুল ইসলাম, মাওলানা নাজমুল হাসান কাসেমী, মাওলানা আব্দুল কাইয়ুম সোবহানী, খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা আহমদ আবদুল কাদের, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা জুনায়েদ আল হাবিব, মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী প্রমুখ।