কুমিল্লার দেবীদ্বার উপজেলার ইউছুফপুর গ্রামে রবিবার, ২৭ এপ্রিল এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়েছে। প্রবাসী বাবা মো. হানিফ মিয়ার মরদেহ বাড়িতে রেখে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিতে হয়েছে তার ছেলে মো. হাসানকে। সকাল ৭টার দিকে ইউছুফপুর গ্রামে এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে।
মো. হাসান স্থানীয় ইউছুফপুর আইডিয়াল হাইস্কুলের বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র এবং ২০২৫ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থী। সে দেবীদ্বার উপজেলার ইউছুফপুর গ্রামের মৃত প্রবাসী মো. হানিফ মিয়ার জ্যেষ্ঠ পুত্র।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, জীবিকার অন্বেষণে হানিফ মিয়া ২০০৮ সালে প্রবাসে যান এবং সৌদি আরবের হাবুনা অঞ্চলে একটি পুলিশ স্টেশনের বাবুর্চির কাজ করতেন। দীর্ঘ ১৭ বছর প্রবাসে কাটানোর পর গতরাতে তার নিথর দেহ দেশে ফেরে।
আরও পড়ুন
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, প্রায় আড়াই মাস আগে কর্মস্থলে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ২২ ফেব্রুয়ারি হানিফ মিয়া মারা যান। দীর্ঘ চেষ্টার পর ২৬ এপ্রিল রাতে তার মরদেহ ঢাকার বিমানবন্দরে এসে পৌঁছায়। আজ সকালে যখন কফিনবন্দি লাশ বাড়িতে আনা হয়, তখন শোকের মাতম শুরু হয়।
বাবার মৃতদেহ দেখে বারবার জ্ঞান হারাচ্ছিল ছেলে হাসান। দুই ভাই ও দুই বোনের মধ্যে হাসানই পরিবারের বড় ছেলে। এমন কঠিন পরিস্থিতিতে হাসানের চাচাতো ভাই আরফিন, যে নিজেও এ বছরের এসএসসি পরীক্ষার্থী, তাকে জোর করে পরীক্ষার কেন্দ্রে নিয়ে যায়। আজ তাদের পদার্থ বিজ্ঞান পরীক্ষা ছিল।
শোকাবহ ও বেদনাবিধুর মন নিয়ে প্রবাসী বাবার লাশ বাড়িতে রেখে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে হাসান। পরীক্ষা শেষে বাড়ি ফেরার পর দুপুরে জোহরের নামাজের পর হানিফ মিয়ার জানাজা সম্পন্ন হয় এবং পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।