বাংলাদেশিদের জন্য ইউরোপের দেশগুলোর ভিসা সেন্টার দিল্লি থেকে সরিয়ে ঢাকায় বা প্রতিবেশী অন্য কোনো দেশে স্থানান্তরের প্রস্তাব দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
সোমবার (৯ ডিসেম্বর) ঢাকায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য দেশগুলোর কূটনীতিকদের সঙ্গে এক বৈঠকে তিনি এই অনুরোধ জানান।
ড. ইউনূস বলেন, “ভারত বাংলাদেশিদের জন্য ভিসা প্রক্রিয়া সীমিত করায় অনেক শিক্ষার্থী ইউরোপের ভিসার জন্য দিল্লি যেতে পারছেন না। এতে তাদের শিক্ষাজীবন অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে এবং ইউরোপের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো মেধাবী বাংলাদেশি শিক্ষার্থী হারাচ্ছে। ভিসা সেন্টার যদি ঢাকায় অথবা কাছাকাছি কোনো দেশে স্থানান্তর করা হয়, তাহলে উভয় পক্ষই উপকৃত হবে।”
আরও পড়ুন
বৈঠকে ড. ইউনূস বিজয়ের মাসে এমন গুরুত্বপূর্ণ আলোচনায় অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়ে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, “ডিসেম্বর আমাদের বিজয়ের মাস। এই সময়ে আপনাদের সঙ্গে এ ধরনের ইন্টারেক্টিভ আলোচনা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।”
তিনি জুলাই-আগস্টে সংঘটিত গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান এবং গত ১৬ বছরে দেশে ঘটে যাওয়া মানবাধিকার লঙ্ঘন, শোষণ, বলপ্রয়োগ ও দুর্নীতির চিত্র তুলে ধরেন।
ড. ইউনূস অর্থনৈতিক দুর্নীতির বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে উল্লেখ করেন, কীভাবে ব্যাংকিং ব্যবস্থা ও অর্থনীতিকে বিপর্যস্ত করা হয়েছে এবং কীভাবে অর্থপাচার দেশের অগ্রগতিতে বাধা সৃষ্টি করছে।
তিনি অভিযোগ করেন যে, “দেশের সাবেক স্বৈরশাসক শেখ হাসিনা ও তার সহযোগীরা বিপুল অর্থপাচার করে দেশের স্থিতিশীলতা নষ্ট করার ষড়যন্ত্র করছে।”
ইউরোপীয় ইউনিয়নের হেড অব ডেলিগেশন মাইকেল মিলারের নেতৃত্বে ১৯ সদস্যের প্রতিনিধি দল এই বৈঠকে অংশ নেন। প্রায় আড়াই ঘণ্টার আলোচনায় শ্রম অধিকার, বাণিজ্য সুবিধা, জলবায়ু পরিবর্তন, মানবাধিকার এবং রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। উভয় পক্ষ টেকসই ভবিষ্যৎ নির্মাণে একযোগে কাজ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করে।