ভারতের দক্ষিণ শহর চেন্নাইয়ে এক ডাক্তারকে ছুরিকাঘাতের শিকার হয়েছে।সারা দেশব্যাপী চিকিৎসকদের নিরাপত্তা নিয়ে নতুন উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে।এই ঘটনায় বিশেষ উদ্বেগজনক কারণ এর আগেও বহু ডাক্তার কর্মস্থলে আক্রান্ত হয়েছেন।এখন এই ধরনের হামলা থেকে সুরক্ষিত থাকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
বুধবার(১৩ নভেম্বর) ঘটনাটি ঘটে যখন সরকারী হাসপাতালে কর্মরত অঙ্কোলজিস্ট ডক্টর বালাজি জগন্নাথন এক রোগীর চিকিৎসা করছিলেন।রোগী ছিলেন এক নারীর মা যার সম্প্রতি ডিম্বাশয়ের ক্যান্সার ধরা পড়ে।অভিযুক্ত ব্যক্তি ওই নারীর ছেলে ছিলেন,যিনি তার মায়ের চিকিৎসা নিয়ে সন্তুষ্ট ছিলেন না। একদিন আগে, তিনি ডাক্তারের সাথে তর্ক করেছিলেন এবং পরদিন ডক্টর জগন্নাথনের কনসালটেশন রুমে ঢুকে রুমটি বন্ধ করে দেন।তারপর তাকে ছুরিকাঘাত করেন।
আরও পড়ুন
ঘটনাটির পরপরই, হাসপাতাল কর্মীরা অভিযুক্ত ব্যক্তিকে আটক করেন এবং পুলিশে সোপর্দ করেন।আহত ডাক্তারকে জরুরি অস্ত্রোপচার করা হয় এবং তার অবস্থা স্থিতিশীল বলে জানানো হয়।ডাক্তারের মাথা, ঘাড়, পিঠ এবং কানের বেশ কিছু স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।হাসপাতালের পরিচালক, ডক্টর এল পার্থসরথী জানান, “ডক্টরের অবস্থা স্থিতিশীল, এবং তাকে আইসিইউতে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।”
এই ঘটনার পর, তামিলনাড়ু রাজ্যে বিভিন্ন ডাক্তার সংগঠন প্রতিবাদে নেমেছে এবং পুরো রাজ্যে চিকিৎসাসেবা বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছে।ভারতের বৃহত্তম ডাক্তার সংগঠন ইন্ডিয়ান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (আইএমএ) এই হামলার তীব্র নিন্দা করেছে এবং ডাক্তারদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হাসপাতালগুলির নিরাপত্তা ব্যবস্থা পুনর্বিবেচনা করার দাবি তুলেছে।
উল্লেখ্য, এমন হামলা শুধুমাত্র চেন্নাই নয়, পুরো ভারতে চিকিৎসকদের জন্য উদ্বেগজনক পরিস্থিতি তৈরি করেছে। দেশব্যাপী একটি সমীক্ষা অনুযায়ী, ৭৫ শতাংশ ডাক্তারই কর্মস্থলে সহিংসতার শিকার হয়েছেন,যার মধ্যে ৬৮.৩৩ শতাংশ হামলার পেছনে রোগীর অভিভাবকদের হাত রয়েছে।এই ঘটনা দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির দুর্বলতারও ইঙ্গিত দেয়।রাজ্যের উপমুখ্যমন্ত্রী উদয়নিধি স্টালিন হাসপাতালে গিয়ে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।
এই ঘটনা ভারতে চিকিৎসকদের জন্য এক নতুন চ্যালেঞ্জ তুলে ধরেছে,যেখানে তাদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা নিয়ে আবারও প্রশ্ন উঠেছে।