নেপালের কাঠমান্ডু জেলা আদালত ২০১৮ সালে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের উড়োজাহাজ বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। গত মঙ্গলবার বিচারক দিবাকর ভট্ট এই রায় দেন। নেপালের ইংরেজি দৈনিক দ্য কাঠমান্ডু পোস্ট এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৮ সালের ১২ মার্চ ঢাকা থেকে ছেড়ে যাওয়া ইউএস-বাংলার ফ্লাইট BS211 কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের সময় দুর্ঘটনায় পড়ে। উড়োজাহাজটি রানওয়ে থেকে ছিটকে গিয়ে আগুন ধরে যায়। এ ঘটনায় ৭১ আরোহীর মধ্যে ৫১ জন প্রাণ হারান। নিহতদের মধ্যে ২২ জন ছিলেন নেপালি, ২৮ জন বাংলাদেশি ও একজন চীনা নাগরিক।
আরও পড়ুন
আদালতের রায়ে বলা হয়েছে, ইউএস-বাংলাকে ক্ষতিগ্রস্ত ১৭টি পরিবারকে মোট ২৭ লাখ ৪০ হাজার মার্কিন ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৩৩ কোটি ৪৪ লাখ টাকা) ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। এই অর্থ আন্তর্জাতিক বিমা কাঠামোর আওতায় প্রাথমিকভাবে দেওয়া ২০ হাজার ডলারের অতিরিক্ত। সর্বোচ্চ ক্ষতিপূরণ নির্ধারণ করা হয়েছে একজন নিউরোসার্জনের পরিবারে, যার পরিমাণ ২ লাখ ৭৭ হাজার ৫৪৮ ডলার।
কাঠমান্ডু পোস্ট এটিকে নেপালের ইতিহাসে একটি যুগান্তকারী রায় বলে উল্লেখ করেছে। এর আগে কোনো উড়োজাহাজ দুর্ঘটনায় আদালত এত বড় অঙ্কের ক্ষতিপূরণ নির্ধারণ করেনি এবং কোনো এয়ারলাইনকে এভাবে দায়ী করা হয়নি। রায়ে পাইলটের অবহেলা, মানসিক অবস্থা এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থায় ত্রুটিকে দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। রায়টি ১৯২৯ সালের ওয়ারশ কনভেনশন ও ১৯৫৫ সালের হেগ প্রটোকল অনুসরণ করে প্রদান করা হয়েছে।
তবে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষ কাঠমান্ডু পোস্টের প্রতিবেদনকে ভিত্তিহীন ও কল্পনাপ্রসূত বলে দাবি করেছে। প্রতিষ্ঠানটির জনসংযোগ বিভাগের মহাব্যবস্থাপক মো. কামরুল ইসলাম এক বিবৃতিতে বলেন, নেপালের কোনো আদালতে ইউএস-বাংলার বিরুদ্ধে এমন কোনো রায় হয়নি। তিনি আরও বলেন, কোনো জাতীয় পত্রিকার খবরের ভিত্তিতে অনুলিপি ছাড়া কোনো সংবাদ প্রকাশ করা সমুচীন নয়।
উল্লেখ্য, দ্য কাঠমান্ডু পোস্ট নেপালের একটি বহুল প্রচারিত ইংরেজি দৈনিক, যা ১৯৯৩ সালে যাত্রা শুরু করে।