থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মধ্যে সীমান্ত সংঘাত বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) ভোরে ভয়াবহ রূপ নেয়। দুই দেশের সামরিক বাহিনী ভারী অস্ত্র ব্যবহার করে মুখোমুখি সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে, যার ফলে প্রাণহানির খবর পাওয়া যাচ্ছে। পরিস্থিতির অবনতিতে সীমান্ত এলাকার সাধারণ মানুষ নিরাপদ আশ্রয়ের উদ্দেশে এলাকা ছাড়তে শুরু করেছে।
আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, এই দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘমেয়াদি সংঘর্ষের শঙ্কা রয়েছে। সামরিক বিশ্লেষণ সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ বলছে, থাইল্যান্ড সামরিক শক্তির দিক থেকে কম্বোডিয়ার তুলনায় অনেক বেশি সক্ষম। থাই সেনাবাহিনীর সক্রিয় সদস্য সংখ্যা ৩ লাখ ৬০ হাজারের বেশি এবং দেশটির ২০২৩ সালের প্রতিরক্ষা বাজেট ছিল ৫.৭ বিলিয়ন ডলার। তাদের রয়েছে প্রায় ৪০০ যুদ্ধ ট্যাঙ্ক, ১২০০ সাঁজোয়া যান ও ২৬০০ কামান।
অন্যদিকে, কম্বোডিয়ার প্রতিরক্ষা বাজেট ২০২৪ সালে ছিল মাত্র ১.৩ বিলিয়ন ডলার। তাদের সক্রিয় সেনা সদস্য সংখ্যা প্রায় ১ লাখ ২৪ হাজার, যার মধ্যে সেনাবাহিনীতে আছে প্রায় ৭৫ হাজার সৈন্য। তাদের রয়েছে ২০০টির বেশি ট্যাঙ্ক ও ৪৮০টি কামান।
আরও পড়ুন
বিমান বাহিনীর দিক থেকেও স্পষ্ট ব্যবধান রয়েছে। থাই বিমান বাহিনীকে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অন্যতম আধুনিক বাহিনী হিসেবে বিবেচনা করা হয়। বাহিনীতে রয়েছে প্রায় ১১২টি যুদ্ধবিমান, যার মধ্যে এফ-১৬ ও সুইডিশ গ্রিপেন রয়েছে। অপরদিকে, কম্বোডিয়ার বিমান বাহিনীতে কোনো যুদ্ধবিমান নেই; তাদের বহরে রয়েছে মাত্র কয়েকটি পরিবহন বিমান ও হেলিকপ্টার।
নৌবাহিনীতেও থাইল্যান্ড এগিয়ে। দেশটির নৌবাহিনীতে প্রায় ৭০ হাজার কর্মী এবং একটি বিমানবাহী রণতরীসহ আধুনিক জাহাজ ও উভচর যুদ্ধযান রয়েছে। বিপরীতে, কম্বোডিয়ার নৌবাহিনী তুলনামূলকভাবে ক্ষুদ্র, যার সদস্য সংখ্যা মাত্র ২৮০০ এবং সীমিত সংখ্যক টহল জাহাজ রয়েছে।
সংঘাতের ফলে উপসাগরীয় অঞ্চলের স্থিতিশীলতা হুমকির মুখে পড়েছে। কূটনৈতিক সমাধানের জন্য আন্তর্জাতিক মহলের দৃষ্টি এখন আসিয়ান ও আঞ্চলিক নেতৃত্বের ওপর নিবদ্ধ রয়েছে।