তিব্বতের ভেতর দিয়ে প্রবাহিত আন্তর্জাতিক নদী ব্রহ্মপুত্রে বিশাল জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের নির্মাণ শুরু করেছে চীন। শনিবার (১৯ জুলাই) আনুষ্ঠানিকভাবে এই মেগা-ড্যামের কাজ উদ্বোধন করেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী লি ছিয়াং। চীনা রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সিনহুয়ার প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
২০২৩ সালের ডিসেম্বরে অনুমোদন পাওয়া প্রকল্পটি চীনের কার্বন নিরপেক্ষতা অর্জন ও তিব্বতের অর্থনৈতিক উন্নয়নের অংশ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। পরিকল্পনা অনুযায়ী, ড্যামটি সম্পন্ন হলে এটি বিশ্বের সর্ববৃহৎ জলবিদ্যুৎ প্রকল্প থ্রি গর্জেস ড্যামকেও ছাড়িয়ে যেতে পারে। এতে পাঁচটি হাইড্রোপাওয়ার স্টেশন নির্মাণের কথা রয়েছে এবং মোট ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ১.২ ট্রিলিয়ন ইউয়ান (১৬৭.১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার)।
আরও পড়ুন
চীনা কর্তৃপক্ষ বলছে, এই প্রকল্প থেকে উৎপাদিত বিদ্যুৎ তিব্বতের পাশাপাশি চীনের অন্যান্য অঞ্চলেও সরবরাহ করা হবে। তবে চীনের এই উদ্যোগ ঘিরে উদ্বিগ্ন ভারত। কারণ, ব্রহ্মপুত্র নদ ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ পানি উৎস। উজানে এমন ড্যাম নির্মাণে ভাটির দেশগুলোর পানির নিরাপত্তা, কৃষি ও পরিবেশ ব্যবস্থা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে ভারত।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, দেশের স্বার্থ রক্ষায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। পাশাপাশি চীনকে অনুরোধ জানানো হয়েছে, যেন নিচু অঞ্চলের দেশগুলোর স্বার্থের প্রতি সম্মান দেখানো হয়। যদিও চীন দাবি করছে, এই প্রকল্প নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ বা ভাটির অঞ্চলে কোনো নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে না এবং ভাটির দেশগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করা হবে।
তবে পরিবেশবিদরা বলছেন, তিব্বতের মতো সংবেদনশীল এলাকায় এমন বৃহৎ অবকাঠামো প্রকল্প প্রাকৃতিক ভারসাম্যের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে। ভারত ও চীনের মধ্যে দীর্ঘদিনের সীমান্ত বিরোধ থাকায় ব্রহ্মপুত্রের উজানে এই প্রকল্প নতুন করে ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে বলে বিশ্লেষকদের অভিমত।