ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে বাংলা ভাষাভাষী নাগরিকদের ‘বাংলাদেশি’ আখ্যা দিয়ে হয়রানি ও গ্রেপ্তারের ঘটনা বাড়ায় তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে পশ্চিমবঙ্গের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। এর প্রতিবাদে ১৬ জুলাই (বুধবার) কলকাতায় একটি বিশাল বিক্ষোভ মিছিল আয়োজন করে দলটি। কলেজ স্ট্রিট থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত আয়োজিত এই পদযাত্রায় নেতৃত্ব দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
নিউজ ১৮-এর বরাতে জানা যায়, প্রবল বৃষ্টি উপেক্ষা করে হাজার হাজার তৃণমূল কর্মী ও সমর্থক মিছিলে অংশ নেন। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন দলীয় নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, ফিরহাদ হাকিমসহ দলের শীর্ষ নেতারা। শহরের কেন্দ্রস্থলে এই দীর্ঘ মিছিল রাজনৈতিক ও সামাজিক বার্তা দেওয়ার উদ্দেশ্যেই আয়োজন করা হয়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
আরও পড়ুন
তৃণমূল কংগ্রেসের অভিযোগ, শুধু আসাম বা দিল্লি নয়, রাজস্থান, ওড়িশাসহ একাধিক রাজ্যে বাংলা ভাষায় কথা বললেই অনেক ভারতীয় নাগরিককে ‘বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী’ হিসেবে চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। এমনকি কিছু ক্ষেত্রে তাঁদের জোরপূর্বক সীমান্ত পার করে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর ঘটনাও ঘটেছে বলে দাবি করা হয়।
মিছিলে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, “বাংলা বললেই বাংলাদেশি বানিয়ে দেওয়া হচ্ছে! নাগরিকদের অনুপ্রবেশকারী হিসেবে দাগিয়ে দেওয়া হচ্ছে—এটা কি দেশের রাজনীতি হতে পারে?” তিনি বিজেপির বিরুদ্ধে ভাষা ও পরিচয়ের ভিত্তিতে বিভাজনের রাজনীতি করার অভিযোগ তোলেন।
মমতা আরও বলেন, “ভাষার অপমান হলে, মানুষের পরিচয়ে আঘাত এলে পশ্চিমবঙ্গ চুপ করে বসে থাকবে না। এবার মানুষই জবাব দেবে—ভোটে হারিয়ে বিজেপিকে শাস্তি দেবে।”
২১ জুলাই ‘শহীদ দিবস’ উপলক্ষে তৃণমূলের এই প্রতিবাদ কর্মসূচি রাজ্যের রাজনৈতিক পরিবেশে একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। ভাষা ও নাগরিক অধিকার রক্ষায় রাজ্য সরকার যে দৃঢ় অবস্থানে রয়েছে, এটি তারই ইঙ্গিত বলেও মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা।