আহমেদাবাদে গত মাসে ঘটে যাওয়া মর্মান্তিক বিমান দুর্ঘটনার প্রেক্ষিতে বোয়িং বিমানের ফুয়েল সুইচ লকিং ব্যবস্থার নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। ভারত সরকার এই পরিস্থিতিতে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে দেশের সব এয়ারলাইনকে বোয়িং ৭৮৭ ও ৭৩৭ মডেলসহ সংশ্লিষ্ট বিমানের ফুয়েল সুইচ পরীক্ষা করার নির্দেশ দিয়েছে।
সোমবার ভারতের ডিরেক্টরেট জেনারেল অব সিভিল অ্যাভিয়েশন (ডিজিসিএ) জানিয়েছে, বোয়িং জেটগুলোর ফুয়েল সুইচ লকিং সিস্টেম পরীক্ষা করে দেখতে বলা হয়েছে যেন যান্ত্রিক ত্রুটি থাকলে তা আগেভাগে শনাক্ত করা যায়। যদিও বোয়িং এবং যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল অ্যাভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফএএ) দাবি করেছে, এই সুইচগুলো নিরাপদ, তবু দুর্ঘটনার প্রেক্ষিতে ভারতসহ বেশ কয়েকটি দেশ বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করছে।
উল্লেখ্য, গত ১২ জুন আহমেদাবাদ থেকে লন্ডনগামী একটি এয়ার ইন্ডিয়া বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার মাঝপথে বিধ্বস্ত হয়। এতে বিমানে থাকা যাত্রীদের মধ্যে একজন ছাড়া সবাই এবং নিচে থাকা আরও ১৯ জন প্রাণ হারান। এটি ভারতের ইতিহাসে অন্যতম ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনার একটি হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।
আরও পড়ুন
প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদনে দুর্ঘটনার জন্য সরাসরি কাউকে দায়ী করা হয়নি। তবে একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, এক পাইলট জিজ্ঞেস করেছিলেন কেন ফুয়েল বন্ধ করা হয়েছে—অপর পাইলট জানান, তিনি তা করেননি। উল্লেখ্য, ২০১৮ সালেই এফএএ একটি পরামর্শ জারি করেছিল যেখানে বলা হয়েছিল, কিছু মডেলের ফুয়েল কাট-অফ সুইচের লকিং ব্যবস্থা যাচাই করা প্রয়োজন, যদিও তা বাধ্যতামূলক ছিল না।
এয়ার ইন্ডিয়া জানিয়েছে, তারা তাদের বহরে থাকা সব ৭৮৭ ও ৭৩৭ মডেলের বিমানের ফুয়েল সুইচ পরীক্ষা করছে। ইতোমধ্যে অধিকাংশ বিমানের পরীক্ষার কাজ সম্পন্ন হয়েছে এবং কোনো ত্রুটি পাওয়া যায়নি। অন্যদিকে, কোরিয়ান এয়ারলাইনস, সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্স, কান্তাস ও জাপানের এএনএও তাদের বোয়িং বিমানের ফুয়েল সুইচ পরীক্ষার উদ্যোগ নিয়েছে।
এয়ার ইন্ডিয়ার সিইও ক্যাম্পবেল উইলসন এক অভ্যন্তরীণ বার্তায় জানিয়েছেন, এখন পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, কোনো যান্ত্রিক ত্রুটি বা রক্ষণাবেক্ষণে গাফিলতির প্রমাণ মেলেনি এবং নিয়ম মেনেই সব কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। তদন্ত চলমান থাকলেও বিশ্বের বিভিন্ন এয়ারলাইন নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে পদক্ষেপ নিচ্ছে।