ইয়েমেনে খুনের মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ভারতীয় নার্স নিমিশা প্রিয়ার রায় আপাতত স্থগিত করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানায়, ইয়েমেন সরকার এবং নিহত ব্যক্তির পরিবারের সঙ্গে আলোচনার পর এই সিদ্ধান্ত এসেছে। এর আগে ১৬ জুলাই তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়ার কথা ছিল, যা ঘিরে ভারতজুড়ে তীব্র আলোড়ন দেখা দেয়।
কেরালার বাসিন্দা নিমিশা প্রিয়া পেশায় একজন নার্স। তিনি ২০০৮ সাল থেকে ইয়েমেনে বসবাস করছিলেন। স্থানীয় এক ব্যবসায়ী তালাল মাহদির সঙ্গে যৌথভাবে ক্লিনিক চালু করার পর দ্বন্দ্ব শুরু হয়। নিমিশার অভিযোগ, মাহদি তার অর্থ ও পাসপোর্ট জোরপূর্বক নিয়ে নেয় এবং নিজেকে স্বামী হিসেবে দাবি করে প্রশাসনিক জটিলতায় ফেলেন। একপর্যায়ে আত্মরক্ষার প্রয়াসে মাহদিকে ঘুমের ইনজেকশন দেন তিনি, কিন্তু অতিরিক্ত মাত্রায় দেওয়ায় মাহদির মৃত্যু হয়। পরে সহকর্মীসহ মরদেহ লুকানোর অভিযোগে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
আরও পড়ুন
২০১৮ সালে ইয়েমেনের আদালত নিমিশাকে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করে, যা পরবর্তীতে দেশটির সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল এবং প্রেসিডেন্ট কর্তৃক বহাল রাখা হয়। এতদিন কারাগারে বন্দি থাকা নিমিশার মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের দিন ঘনিয়ে এলে ভারত সরকারের পক্ষ থেকে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা শুরু হয়। বিশেষ করে খুন হওয়া ব্যক্তির পরিবারের সঙ্গে ‘রক্তমূল্য’ বা আর্থিক ক্ষতিপূরণের বিনিময়ে আপসের চেষ্টা চালানো হয়।
ভারতের অ্যাটর্নি জেনারেল সুপ্রিম কোর্টে জানান, সরকার তাদের সাধ্যমতো সব প্রচেষ্টা চালিয়েছে, তবে ইয়েমেনের সঙ্গে সরাসরি কূটনৈতিক সম্পর্ক না থাকায় চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে সীমাবদ্ধতা রয়েছে।
এনডিটিভি জানায়, ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং সংশ্লিষ্ট দূতাবাস নিয়মিতভাবে ইয়েমেনের স্থানীয় প্রশাসন, কারা কর্তৃপক্ষ ও প্রসিকিউটর অফিসের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে যাচ্ছে। আপাতত মৃত্যুদণ্ড স্থগিত হলেও, মুক্তি বা দেশে প্রত্যাবর্তনের বিষয়ে কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসেনি।