পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়ার উত্তর ওয়াজিরিস্তান জেলায় সন্ত্রাসবিরোধী এক অভিযানে ১৪ জন সন্ত্রাসীকে হত্যা করেছে দেশটির সেনা ও পুলিশ বাহিনী। পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর জনসংযোগ দপ্তর (আইএসপিআর) জানিয়েছে, এই অভিযানে নিহত সবাই ‘ভারতের মদতপুষ্ট’ সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সদস্য ছিলেন।
আইএসপিআরের দেওয়া বিবৃতিতে বলা হয়, উত্তর ওয়াজিরিস্তানের দাত্তা খেল এলাকায় গোপন গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে এ অভিযান পরিচালিত হয়। পাকিস্তানের ভেতরে ‘প্রক্সি সন্ত্রাসবাদ’ ছড়িয়ে দিতে ভারত জড়িত— এমন অভিযোগও করেছে দেশটির সেনাবাহিনী। সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সন্ত্রাসবাদ সম্পূর্ণরূপে নির্মূল না হওয়া পর্যন্ত এ ধরনের অভিযান চলমান থাকবে।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ এ অভিযানের প্রশংসা করে এক বিবৃতিতে বলেন, যারা সন্ত্রাসের পৃষ্ঠপোষক, তারা মানবতার শত্রু— এবং তাদের নির্মূল করা হবে। এর আগে বেলুচিস্তানে পরিচালিত এক অভিযানে পাঁচ বিচ্ছিন্নতাবাদীকে হত্যা করা হয়, যারা ভারতীয় মদতে তৎপর বলে দাবি করা হয়েছিল।
আরও পড়ুন
উল্লেখ্য, খাইবার পাখতুনখোয়া অঞ্চল দীর্ঘদিন ধরে তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি)-এর ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। অপরদিকে, বেলুচিস্তানে সক্রিয় বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন বালোচ লিবারেশন আর্মি (বিএলএ) পাকিস্তান থেকে অঞ্চল বিচ্ছিন্ন করার লক্ষ্যেই হামলা চালিয়ে আসছে।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পাকিস্তানে সন্ত্রাসী তৎপরতা উদ্বেগজনক হারে বেড়েছে। ২০২৪ সালে দেশটিতে ৪৪টি বড় ধরনের সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটে, যা গত এক দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ। এসব হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন ৬৮৫ জন নিরাপত্তা কর্মী ও ৯২৭ জন বেসামরিক নাগরিক। সন্ত্রাস দমনে পাল্টা অভিযানে নিহত হয়েছে প্রায় ৯৩৪ জন জঙ্গি।
এদিকে গত এপ্রিল মাসে ভারতের জম্মু-কাশ্মিরের পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর এক জঙ্গি হামলায় ২৫ জন নিহত হয়, যার দায় স্বীকার করে টিআরএফ নামক একটি গোষ্ঠী। ভারত দাবি করে, এই হামলার পেছনে পাকিস্তানভিত্তিক লস্কর-ই-তৈয়বার সম্পৃক্ততা রয়েছে। এরপর থেকে দুই দেশ একে অপরের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদে মদতের অভিযোগ জানিয়ে আসছে।