বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ঢাকা-নারিতা সরাসরি ফ্লাইট স্থগিতের সিদ্ধান্তে গভীর অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন জাপান প্রবাসী বাংলাদেশিরা। তারা মনে করছেন, এই সিদ্ধান্তের পেছনে দুর্নীতি বা ষড়যন্ত্র রয়েছে কিনা, তা খতিয়ে দেখা জরুরি। শুধু ক্ষতির অজুহাতে ফ্লাইট বন্ধ না করে এর প্রকৃত কারণ অনুসন্ধান করে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান তারা।
গত ১৮ মে টোকিওর একটি হোটেলে ‘বাংলাদেশ কমিউনিটি জাপান’ আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় বক্তারা এই ক্ষোভ প্রকাশ করেন। সভায় জানানো হয়, প্রায় ১৭ বছর পর ২০২৩ সালে পুনরায় চালু হওয়া ঢাকা-নারিতা সরাসরি ফ্লাইট আগামী ১ জুলাই থেকে সাময়িকভাবে স্থগিত করার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। অথচ মাত্র দেড় বছরেই এ রুট আবার বন্ধ হওয়ার খবরে হতাশ প্রবাসীরা।
বক্তারা বলেন, ফ্লাইট স্থগিতের কারণ হিসেবে বিমান কর্তৃপক্ষ হজ ফ্লাইট, উড়োজাহাজের স্বল্পতা ও ব্যবসায়িক বাস্তবতার কথা বললেও তা যথাযথ ব্যাখ্যা নয়। বিএনপি জাপান শাখার সভাপতি মীর রেজাউল করিম ফ্লাইট লোকসানের পেছনে দুর্নীতির সম্ভাবনার কথা তুলে ধরেন এবং বিমান কর্তৃপক্ষকে সতর্ক করে বলেন, কোনো চক্রান্তে যেন এই রুট বন্ধ না হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে।
আরও পড়ুন
সভায় জাপানে বসবাসরত ব্যবসায়ী ও পেশাজীবীরা বলেন, সরাসরি ফ্লাইটটি জাপানগামী শিক্ষার্থী, কর্মজীবী ও ব্যবসায়ীদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এতে ব্যবসা-বাণিজ্য ও প্রবাসজীবনে গতি এসেছে। পাশাপাশি বাংলাদেশ থেকে শাক-সবজি, মাছসহ নানান পণ্য জাপানে পৌঁছানোর সুযোগ বাড়ায় বাণিজ্যিক লাভবানও হচ্ছিলেন প্রবাসীরা।
বক্তারা আরও জানান, ঢাকার তৃতীয় টার্মিনাল, জাপান ইকোনমিক জোন ও মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দরসহ জাইকার প্রকল্পেও এ রুটের ফ্লাইট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। এর বন্ধ হওয়ায় শুধু প্রবাসীরা নন, জাপানিজরাও ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। এতে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হওয়ার আশঙ্কাও প্রকাশ করেন তারা।
বিশিষ্ট ব্যবসায়ী এম ডি এস ইসলাম নান্নু ফ্লাইট বন্ধের পেছনে প্রশাসনের কোনো গোপন গোষ্ঠী জড়িত কি না, তা খতিয়ে দেখতে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। অন্য বক্তারা ফ্লাইট পরিচালনায় খরচ কমিয়ে তা চালু রাখার আহ্বান জানান। সভায় আরও বক্তব্য রাখেন জাপানের বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় সংগঠনের নেতারা।