তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ানের পাকিস্তানপন্থী অবস্থানের পর ভারতে তুর্কি পণ্যের বিরুদ্ধে ব্যাপক বয়কট শুরু হয়েছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে মুদি দোকান থেকে শুরু করে বড় বড় খুচরা বিক্রেতা পর্যন্ত তুর্কি পণ্য বিক্রি বন্ধ করে দিচ্ছে। কসমেটিকস, পোশাক, চকলেট, কফিসহ নানা ভোগ্যপণ্য এই বয়কটের আওতায় পড়েছে। ব্রিটিশ সংবাদ সংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে।
সম্প্রতি ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে জঙ্গি হামলার ঘটনায় পাকিস্তানের বিরুদ্ধে অভিযান চালায় ভারত। সেই প্রেক্ষিতে তুরস্ক পাকিস্তানের প্রতি প্রকাশ্য সমর্থন জানালে ভারতীয় জনগণের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়। এর প্রতিক্রিয়ায় অল ইন্ডিয়া কনজ্যুমার প্রোডাক্টস ডিস্ট্রিবিউটরস ফেডারেশন তুর্কি পণ্যের ওপর অনির্দিষ্টকালের জন্য পূর্ণ বয়কট ঘোষণা করেছে।
এই বয়কটের প্রভাব পড়েছে ভারতীয় অনলাইন খুচরা বাজারেও। ফ্লিপকার্টের সহযোগী মিন্ত্রা এবং রিলায়েন্স রিটেইলের ‘আজিও’ প্ল্যাটফর্ম থেকে একের পর এক তুর্কি ফ্যাশন ব্র্যান্ড যেমন ট্রেন্ডিওল, এলসি ওয়াকিকি ও মাভি সরিয়ে ফেলা হয়েছে। এই পদক্ষেপকে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ‘জাতীয় স্বার্থে’ নেওয়া সিদ্ধান্ত বলে ব্যাখ্যা করছে।
আরও পড়ুন
এদিকে ভারত সরকার এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে তুর্কি পণ্যের আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি না করলেও, বেসরকারি এই পদক্ষেপ অর্থনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। কনজ্যুমার ফেডারেশনের তথ্যমতে, শুধু খাদ্যপণ্যের ক্ষেত্রেই এই বয়কট প্রায় ২ হাজার কোটি রুপির বাজারে প্রভাব ফেলবে। ২০২৪ সালে ভারত তুরস্ক থেকে ৮১ মিলিয়ন ডলারের পোশাক এবং ৬০ মিলিয়ন ডলারের আপেল আমদানি করেছিল।
বয়কটের প্রভাব পড়েছে পর্যটন খাতেও। তুরস্কগামী ফ্লাইট, হোটেল এবং প্যাকেজ বুকিং বন্ধ করেছে ফ্লিপকার্ট। একইসঙ্গে অনেক ভারতীয় নাগরিক তুরস্ক সফরের পরিকল্পনা বাতিল করছেন। এমনকি দিল্লিভিত্তিক তুর্কি বিমান সংস্থা সেলেবির নিরাপত্তা ছাড়পত্রও বাতিল করা হয়েছে। ভারতীয় এই প্রতিক্রিয়াকে তুরস্কের প্রতি ‘কঠোর বার্তা’ হিসেবেই দেখছে আন্তর্জাতিক মহল।